বিশেষ নাগরিক অধিকার আইন নিয়ে থমথমে কাশ্মীর
ভারতীয় সংবিধানের জম্মু-কাশ্মীরের অধিবাসীদের বিশেষ নাগরিকত্ব অধিকার বিষয়ক ধারাটি বাতিলের শুনানি আগামী ২৭ আগস্ট থেকে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন সরকারের যুক্ত করা এ ধারা বাতিলের আশঙ্কায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে কাশ্মীর জুড়ে। আদালতের শুনানির প্রতিবাদে দুই দিনের ধর্মঘটের পাশাপাশি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান আর সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে যখন উদ্বিগ্ন জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। তখন নতুন করে কাশ্মীরীদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে তাদেরকে বিশেষ নাগরিক অধিকার দেয়া সংবিধানের ধারাটি বাতিলের উদ্যোগ।
১৯৫৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের নির্দেশে কাশ্মীরকে বিশেষ নাগরিক অধিকার দিয়ে ভারতের সংবিধানের ৩৫ এ ধারা যুক্ত করা হয়। এ ধারায় কাশ্মীরে অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে বসবাস, সম্পত্তি কেনা এবং সরকারি চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
সম্প্রতি এই আইনটির বাতিল চেয়ে দিল্লির হাইকোর্টে আবেদন করে হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন আরএসএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত 'উই দ্য সিটিজেন' নামের একটি বেসরকারি সংগঠন। তাদের দাবি, এ আইনটি ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছে।
আদালতে ওই আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও বিরাজ করছে ব্যাপক উত্তেজনা। দুই দিনের ধর্মঘটের পাশাপাশি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। স্থানীয়দের আশঙ্কা, কাশ্মীরের ভৌগলিক চরিত্র পাল্টানোর জন্যই এ আইন বাতিলের কথা বলা হচ্ছে। রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে জনগণের মনোযোগ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ষড়যন্ত্র করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বাশার আহমেদ (স্থানীয় ব্যবসায়ী, জম্মু-কাশ্মীর) বলেন, আমরা এ ধর্মঘটকে পূর্ণ সমর্থন করছি। কারণ এই আইনের সঙ্গে কাশ্মীরের জনগণের সম্মান ও মর্যাদা জড়িয়ে আছে। মূল সমস্যার সমাধান না করে জনগণকে নতুন করে উসকে দেয়া হচ্ছে। ভারত সরকারের এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করবো।
কাশ্মীরের আইনজীবীরা বলছেন, ১৯৫৪ সালের ওই আইনের মাধ্যমে কাশ্মীদের পরিচয় এবং চারটি অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। আইনটি বাতিল হলে জাতিসংঘ স্বীকৃত কাশ্মীরবিরোধে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। যদিও কাশ্মীরিদের এমন আশঙ্কা ও ভয়ের কথা উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্র শাসিত বিজেপি সরকার।