উচ্চমাত্রার ক্যামিকেল ব্যবহারে নিরাপদ ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে চামড়া শিল্প শ্রমিকরা
উচ্চমাত্রার ক্যামিকেল ব্যবহারে নিরাপদ ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে চামড়া শিল্প নগরীর শ্রমিকরা। নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্র না থাকা এবং চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায়, অনেক সময় অসুস্থতা নিয়েই কাজ করেন তারা। অস্বাস্থ্যকরভাবে কাজ করায় তাৎক্ষণিক মৃত্যুর আশঙ্কাও রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা সেবার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে ট্যানার্স এসোসিয়েশন।
লবণ দেয়া চামড়া পাকা চামড়ায় পরিণত করতে কয়েকধাপে ব্যবহার করতে হয় বিভিন্ন প্রকারের উচ্চ মাত্রার ক্যামিকেল। এসব ব্যবহারে মানব দেহে ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় ক্যামিকেল ড্রাম বা বস্তায় স্পষ্টভাবেই সতর্কতামূলক লেখা থাকে, ক্যামিকেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই ঢেকে নিতে হবে হাত, মুখমণ্ডলসহ পুরো শরীর।
কিন্তু কে শোনে কার কথা। হেমায়েতপুরের ট্যানারিগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই কাজ করছে শ্রমিকরা। কিছু কারখানায় শ্রমিকরা হাতে গ্লাবভ ব্যবহার করলেও পুরো শরীর ঢেকে কাজ করার নেই কোন ব্যবস্থা। আছে শ্রমিকদের অনীহাও। এ বিষয়ে ট্যানারি ভেতরের শ্রমিকরা মালিকের ভয়ে কথা বলতে রাজি না হলেও, অনেকেই জানান বিভিন্ন সমস্যার কথা।
শ্রমিকরা বলেন, ‘কারখানার পানি পায়ে পড়লে ঘা হয়ে যায়। এলার্জি রোগ দেখা দেয়। এখানে যদি কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয় তাহলে রোগি নিয়ে অনেক দূরে যেতে হয়।'
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ক্যামিকেলের প্রভাব শুধু শরীরের চামড়াতেই নয়, আশঙ্কা রয়েছে তাৎক্ষণিক মৃত্যুরও। নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিতের দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তর এড়াতে পারে না বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা।
মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সুদ্বীপ রঞ্জন দেব বলেন, ‘ট্যানারির শ্রমিকদের গায়ে যে প্রদাহ দেখা দিচ্ছে তা সহজে দূর হয় না। খাদ্যনালীতে বেশী পরিমাণ চলে গেলে কোনো চিকিৎসায় কাজ হয় না।'
এখানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে যেতে হয় সাভার। ব্যয় বহুল হওয়ায় স্বল্প মূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের পরামর্শ চিকিৎসকদের। এ বিষয়ে শীঘ্রই উদ্যোগ নেয়ার কথা জানায় ট্যানারস এসোসিয়েশন।
বিটিএ’র সভাপতি মো. শাহিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা দ্রুত চেষ্টা করবো সাভারের কোনো মেডিকেলের সঙ্গে চুক্তি করা। যদি কোনো দুর্ঘটনা হয় তাহলে শ্রমিকরা যাতে দ্রুত সেবা পায় সেই ব্যবস্থা আমরা করবো।'
ট্যানরীর কর্মপরিবেশের উন্নতি না হলে আগামীতে উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।