চলে গেলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী আর নেই। বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকালে দিল্লির এআইএমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছি যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী আজ (১৬ আগস্ট) বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে মারা যান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিগত ৩৬ ঘণ্টায় তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়। এই অবস্থায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও তার মৃত্যু ঘটে।’
৯৩ বছর বয়সী এই প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ পরিচিত ছিলেন তার শক্তিশালী বাগ্মীতা ও কবিতার জন্য। ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বাজপেয়ী ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসেন। তবে, সে সময় মাত্র ১৩ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীত্ব পেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে এক বছরের কিছু বেশি সময়ের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে। ১৯৯৯ সালের নির্বাচনে ফের বিজয়ী হয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৫ সালে রাজনীতি থেকে অবসরে যান বাজপেয়ী। ২০০৯ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার পর থেকে শারীরিকভাবে আরো দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন।
চলতি বছরের জুনে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস হাসপাতালে কিডনি জটিলতা, মুত্রথলির সংক্রমণ এবং বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হন বাজপেয়ী।
১৯২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর গোয়ালীয়রে জন্ম নেয়া বাজপেয়ী ১৯৩৯ সালে রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সংঘে যোগদান করেন। ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠানটির রাজনৈক সংগঠন ভারতীয় জনসংঘের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন তিনি। ১৯৬৮ সালে বাজপেয়ী এই দলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে ভারতে জরুরি অবস্থা চলাকালীন দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে কারাবন্দী হয়েছিলেন বাজপেয়ী নিজেও। ১৯৭৭ সালের নির্বাচনের আগে নাম পরিবর্তন করে ‘জনতা পার্টি’ নামে নতুন এক জোট তৈরি করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। নির্বাচনে জিতে মোরারজী দেশাইয়ের সরকারে সে সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন বাজপেয়ী।
জনতা পার্টির পতনের পর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী এল কে আদভানির সঙ্গে ১৯৮০ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপি গঠন করেন বাজপেয়ী।
২০১৫ সালে বাজপেয়ীকে ভারতের শীর্ষ বেসামরিক সম্মাননা ভারত রত্নে ভূষিত করা হয়।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস