ফেরি সংকটে ঘাটে ট্রাকের দীর্ঘ সারি, তিন দিনে ১৫ গরুর মৃত্যু
শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়করে নরসিংহপুর ঘাটে ফেরি স্বল্পতার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় সাড়ে তিনশ' পণ্যবাহী ট্রাক ঘাটে আটকা পরেছে। এর মধ্যে কোরবানীর গরুবাহী ট্রাক আছে শতাধিক। এদিকে গরুবাহী ট্রাক পার না হতে পেরে অতিরিক্ত গরমে গত তিন দিনে ১৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
ট্রাক চালক ও গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা জানান, শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের সদর উপজেলার মনোহর বাজার হতে ভেদরগঞ্জের নরসিংহপুর ফেরি ঘাট পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়ক নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে এ সড়ক দিয়ে চার মাস যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। দীর্ঘ সময় সড়কটি বন্ধ থাকার কারণে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী ও পন্যবাহী যানবাহন কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ দিয়ে পারাপার হচ্ছিল। সম্প্রতি নাব্যতা সংকটের কারণে ওই ঘাটে ফেরী চলাচল বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে গত মঙ্গলবার হতে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার পন্যবাহী যানবাহন শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কটি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যাতায়াত শুরু করেছে।
কোরবানীর গরু নিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, মাগুরা, ফরিদপুর, নাড়াইল, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা ও স্থলবন্দর বেনাপোল থেকে গরু বোঝাই করে ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন কোরবানীর পশুর হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। ওই ব্যবসায়ীরা দ্রুত ও কম খরচে হাটে পৌছার জন্য শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক ব্যবহার করছেন। ওই সড়কের নরসিংহপুর-হরিনা ঘাটে দুটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ওই দুটি ফেরী দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ১২০টি গাড়ি পারাপার করা সম্ভব হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে কেতকি নামে আরেকটি ফেরী চলাচল শুরু করেছে। ওই ফেরী দিয়ে প্রত্যেকদিন আরো ৪০টি গাড়ি পারাপার করতে পারবে। প্রত্যেক দিন ওই ঘাটে চারশ' থেকে পাঁচশ' গাড়ি আসছে। পারাপার হতে না পেরে গাড়ি গুলো ঘাটে আটকা পরছে।
গাড়ির জট থাকার কারণে পানি, খাদ্য সংকট ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় গরু অসুস্থ হয়ে পরছে। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অসুস্থ্য হয়ে ১৫টি গরু মারা গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথের নরসিংহপুর ফেরীঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, কাঠলবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল বিঘ্ন হচ্ছে। এ কারণে শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে পণ্যবাহী গাড়ি বেশি আসছে। তার মধ্যে কোরবানীর গরুবাহী ট্রাক রয়েছে। দুটি ফেরি দিয়ে গাড়ি পারাপার করা হচ্ছিল। এখন তিনটি ফেরি দিয়ে গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। আশা করছি দুই-এক দিনের মধ্যে ঘাটের যানজটে নিরসন হবে।