নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আড়াই লক্ষাধিক ইয়াবাসহ পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা আটক
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫০ টাকাসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনকে আটক করেছে র্যাব-১১ সদস্যরা।
সোমবার (২০ আগস্ট) ভোরে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকা থেকে র্যাব তাকে আটক করে। এ সময় র্যাব মাদক বহনের কাজে ব্যবহৃত সালাউদ্দিনের একটি সাদা রংয়ের ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার ও গাড়িতে থাকা ডিবি পুলিশের একটি জ্যাকেট জব্দ করে।
দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগর এলাকায় র্যাব ১১’র সদর দপ্তরে ভারপ্রাপ্ত সিও মেজর আশিক বিল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান,
তাকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, টেকনাফ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান গ্রহণ করতে সালাউদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব ভোরে সেখানে অভিযান চালায়। সময় ইয়াবা ও ইয়াবার বিক্রির টাকাসহ হাতেনাতে অাটক করা হয় তাকে। এছাড়াও তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ডিবি পুলিশের আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ডসহ আরো কিছু অবৈধ দ্রব্য সামগ্রী। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আরো দুইটি মাদকের মামলা রয়েছে। ডিবি পুলিশ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরও সালাউদ্দিন নিজেকে ডিবির এএসআই পরিচয় দিয়ে মাদক ব্যবসা সহ আইনবিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল।
তিনি জানান, এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে, গত ২৩ জুলাই (সোমবার) র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এই বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ৫ হাজার ৬২০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৯ লাখ ৪০০ টাকা উদ্ধার করে। এ সময় সালাউদ্দিন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তার সহযোগী সুমনকে (২৫) আটক করে র্যাব।
আটক সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে র্যাব চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে অভিযান চালায় ও সালাউদ্দিনের ওপর নজরদারিসহ তাকে আটকের অভিযান অব্যাহত রাখে।
এদিকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রায় ৮ মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে বরখাস্ত হন এএসআই সালাউদ্দিন । এরপর থেকে সালাউদ্দিন পলাতক। পলাতক হলেও তিনি এখনো নারায়ণগঞ্জ ডিবি’র অফিসার পরিচয় দিয়ে সবখানে চলে।
স্থানীয় লোকজন তাকে সালাউদ্দিন স্যার ও ডিবি স্যার হিসেবে চেনে। ইতোমধ্যে সে মাদক ব্যবসা করে অগাধ অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছে। নিজ মালিকানাধীন ৩টা প্রাইভেটকারে রয়েছে যেগুলো ইয়াবা পরিবহন ও সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হয়। জাসিম, ওসমান ও বাহাদুর নামের তিনজন ব্যক্তিগত ড্রাইভারও আছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরে রয়েছে ‘জেন্টস পার্লার’ নামক বিউটি পার্লার। মাদক ব্যবসার আর্থিক হিসাব দেখাশোনার জন্য রয়েছে রয়েছে ব্যক্তিগত সহকারী। গ্রেফতারকৃত সুমন বেতনভোগী কর্মচারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্ব পালন করে আসছে।
জসিম, ওসমান ও বাহাদুর প্রাইভেটকারে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন মাদক স্পটে নিয়মিত ইয়াবা পৌঁছে দেয়। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সুমন সালাউদ্দিনের নির্দেশ মতে কক্সবাজারের ইয়াবা সরবরাহকারীদের কাছে নিয়মিত টাকা পাঠিয়ে থাকে।
ওই সময় র্যাব জানায়, বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিন পুলিশের ডিউটির ধরন, মাদকবিরোধী অভিযানের পদ্ধতিসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কর্মকৌশল সম্পর্কে ধারণা থাকায় সে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে সহজেই মাদক ব্যবসা করে আসছিলেন ।