দেশের-দ্বিতীয়-বৃহত্তম-চামড়ার-বাজার-বসে-যশোরের-রাজারহাটে চামড়া পাচারের শঙ্কা
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার বসে যশোরের রাজারহাটে। ঈদ পরবর্তি সময়ে তাই এ বাজারের দিকে নজর থাকে দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের। এজন্য ঈদ পরবর্তী কয়েকটি হাটেই কোটি কোটি টাকার চামড়া বিক্রি হয়। তবে এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। ঈদ পরবর্তী প্রথম হাটে আজ শনিবার যে হাট বসে তা একেবারেই জমেনি। এদিন ১ লাখ চামড়া উঠার কথা থাকলেও আসে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার চামড়া। যে পরিমাণ চামড়া ওঠে তার ন্যায্য মূল্য পাননি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ কারণে এবার ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা বড় ধরণের লোকসানের মুখে পড়েছেন। বড় ধরনের লোকসান এড়াতে কেউ কেউ চামড়া ভারতে পাচার করে দিতে পারেন বলে আশংকা করা হচ্ছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, 'যে দামে তারা চামড়া কিনেছেন সে দামেও তারা তা বিক্রিও করতে পারেননি। আমরা গ্রাম থেকে চড়া দামে চামড়া কিনে বাজারে এসে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ৮৫০ টাকা দিয়ে চামড়া কিনে বাজারে দাম উঠেছে ৫০০ টাকা। সরকার একটি ব্যবস্থা নিলে আমাদের জন্য ভালো হয়। নায্যমূল না পেলে চামড়ার চালান বাইরে চলে যাবে।'
ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট মহাজনদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় চামড়ার বাজারে ধস,এ অবস্থা থাকলে ভারতে চামড়া পাচার হওয়ার আশংকা করছে পাইকারী ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, 'ট্যানারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ায় এই ধস। ৪৫-৫০ টাকার ওপরে ফুট কিনবে না। ৩০ বছর ব্যবসা জীবনে এ বছরের বাজার সবচেয়ে খারাপ। এদেশের পণ্য বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পণ্য। এই চামড়া পণ্য ক্রয়ের জন্য ভারত হা করে রেয়েছে, সুযোগ পাইলেই কামড়ে দেবে।'
চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে জেলা ভিত্তিক লোনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল। তিনি বলেন, 'জেলা ভিত্তিক যদি ঋণের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে নগদ টাকার সংকট কেটে যাবে। পাশাপাশি চামড়া রপ্তানি করে হাজার হাজার কোটি টাকার আয়ের যে খাত তৈরি হয়েছিলো, প্রধানমন্ত্রী যদি এই খাতে হস্তক্ষেপ না করে তাহলে এই খাত বিপর্যয়ের দিকে যাবে।'
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খাঁন বলেন, 'চামড়া ব্যবসার সাথে যারা জড়িত সবাইকে চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখার আহবান জানায়। তিনি বলেন, 'চামড়া শিল্প এবং এর সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদেরকে বাঁচাতে গেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এই দিকে নজর রাখতে হবে। এই ধরণের নিম্মমুখি বাজার দর যাতে না হয়।'
গতবছর ঈদ পরবর্তী হাটে প্রায় ৫ কোটি টাকার চামড়া বিকিকিনি হয়েছিল। এবার সেখানে বিক্রি হয়েছে এক কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মত।