আক্কেলপুরেও ট্যানারী মালিকদের সিন্ডিকেট চামড়া ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম
নিরেন দাস,(Channel 4TV) জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম একেবারেই কম। তবুও কম দামেই বেচাকেনা হচ্ছে এই সব মূল্যবান চামড়াগুলো।
আন্তর্জাতিক বাজার সহ প্বার্শবর্তী দেশ ভারতে এসব চামড়ার মূল্য তিনগুণ বেশি থাকলেও ট্যানারী মালিকদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এবার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া সহ বকেয়া টাকা পরিশোধ না করার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়। ট্যানারী সিন্ডিকেটের একটি মহল গোপনে জানান যে। এ ট্যানারী মালিকরা বর্তমান সরকারের নির্ধারিত চামড়া শিল্পের সকল সুযোগ-সুবিধাই ভোগ ট্যানারী মালিকরা। তবুও সাধারন চামড়া ব্যবসীরা এবারে চামড়ার সঠিক মূল্য না পেয়ে ইতিমধ্যে পথে বসতে শুরু করেছেন সে সকল সাধারণ চামড়া ব্যবসায়ীরা সহ ঈদ মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা।
এ সিন্ডিকেট সূত্রে আরও জানা যায়, জয়পুরহাট জেলা ৫ টি উপজেলার মধ্যে জেলা সদর ও পাঁচবিবি উপজেলাটি ভারতের সীমান্তের শেষ সীমানা হওয়ার ফলে এবারের অল্প মূল্যের চামড়া গুলি ভারতে পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে। উপজেলার সাধারন বেশ কয়েক জন চামড়া ব্যবসায়ীরা সহ উপজেলার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা এসব চামড়া গুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভারতে পাচার হবে এমন আশংসা বুঝতে পারছেন বলে তারা জানান।
এদিকে সরকারের নির্দেশ বাংলাদেশ থেকে কোন বিদেশে চামড়া পাচার হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে প্রাশাসনের কঠোর নজরদারির নির্দেশ থাকা স্বর্থেও। স্থানীয় প্রভাশালীদের সহ প্রশাসন কে একটি সিন্ডিকেট ম্যানেজ করেই বিভিন্ন মাধ্যমে প্বার্শবর্তী ভারতে বসে ব্লু চামড়াটি অবৈধ ভাবে এই দেশ থেকে সংগ্রহ করছেন সেই সিন্ডিকেট। যাহার ফলে এবার চামড়া শিল্পে এই প্রভাবটি খুবী বেশিই পড়বে সঙ্গে ইতিপূর্বে সাধারন চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া গুলো অল্প মূল্যে বিক্রি করার পরেও বিক্রয়কৃত টাকা না পেয়ে চরম বিপদে পরেছেন সাধারন ব্যাবসায়ীরা । এ ব্যাপারে এবার ঈদে ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনার সম্ভাবনা থাকলেও ট্যানারী মালিকদের কাছ থেকে পাওনা টাকা না পাওয়ায় আরও বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা। যারা শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করে এবার নিজেদের টাকায় কম দামে চামড়া কিনছেন ব্যবসায়ীরা কিনেছেন। প্রতি বছর ঈদুল আযাহার দিনে আক্কেলপুর কোরবানির পশুর চামড়া বেচাবিক্রয়ের জন্য আক্কেলপুর চার মাথা মোড়ে বিশাল বাজার বসতো। এবার পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা সহ গ্রামাঞ্চল থেকে চামড়া কিনে এনে বিক্রির জন্য ভিড় করেন মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারে চামড়ার দাম কম হওয়ায় মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের এবার পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অপরদিকে এক শ্রেণির শক্তিশালী সিন্ডিকেট ব্লু চামড়া অধিক লাভে ভারতে অবৈধ ভাবে পাচার করার কারণে চামড়া বাজারে মূল্যহীন ধস নেমেছে বলে জানান ছোট বড় অনেক চামড়া ব্যবসায়ীরা। আক্কেলপুর হাজী পাড়ার চামড়া ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম সহ আরও অনেক চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার যদি এই ব্লু চামড়া টি বৈধ ভাবে রফতানি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তাহলে আবারও আগের মতো আমাদের চামড়া ব্যবসা চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশা ব্যক্ত করেন এইসব চামড়া ব্যবসায়ীরা।
পৌর শহরের চামড়া ব্যবসায়ী মোঃ রাজ্জাক,রোস্তম সহ অনেক চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমান বাজারে লবণ সহ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিনের ব্যবসা বলে আমরা ঝুঁকি নিয়ে চামড়া কিনেছি যাতে মনকে মন লবণ ব্যবহার করে চামড়া গুলি টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন কোম্পানিরা যদি ভালো দাম দেয় তাহলে আমরা ভালো দাম পাবো তা না হলে ব্যাপক লোকশানে পড়তে হবে।
পৌর শহরের চামড়া ব্যবসায়ী মোঃ রাজ্জাক,রোস্তম সহ অনেক চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমান বাজারে লবণ সহ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিনের ব্যবসা বলে আমরা ঝুঁকি নিয়ে চামড়া কিনেছি যাতে মনকে মন লবণ ব্যবহার করে চামড়া গুলি টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন কোম্পানিরা যদি ভালো দাম দেয় তাহলে আমরা ভালো দাম পাবো তা না হলে ব্যাপক লোকশানে পড়তে হবে।
তাদের সবচেয়ে লোকশানের কারণের উল্লেখযোগ্য বিষয়টি তুলে ধরে বলেন আমরা সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছি ট্যানারী মালিকদের জন্য। যাঁরা সরকারের কাছ থেকে ঠিকই সুবিধা ভোগ করছেন কিন্তু লবণের জ্বলে ভেসে যাচ্ছি আমরা ছোট-খাটো চামড়া ব্যবসায়ীরা। কেননা এ ট্যানারী মালিকদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া ও আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করার কারণে আমরা আমাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বেশি দামে চামড়া কিনতে হয়েছে এবং এখনো তাদের নির্ধারণ করা দামেই আমরা চামড়া কিনছি। গত বছরের কথা তুলে ধরে চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেন আমরা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার চামড়া ট্যানারী মালিকদের কাছে সরবরাহ করলে এক বছরে অনেক ঘুরে ঘুরে অনেক চেষ্টা করে তাদের নিকট হতে অর্ধেকেরও কম টাকা পেয়েছি যা এখনও আমার ট্যানারী মালিকদের কাছে অধিকাংশ টাকা পড়ে আছে। তারা অনেক বড় ব্যবসায়ী বলে তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় না তবে সরকার যদি আমাদের হয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে আমরা বাঁচবো তার সঙ্গে বাঁচবে এই চামড়া শিল্প গোষ্ঠী বলে সরকারের এই সব সাধারন চামড়া ব্যবসায়ীরা অনুরোধ করেন।
আক্কেলপুর উপজেলায় চামড়া ব্যবসায়ীদের এখনো কোন নির্ধারিত সমিতি না থাকলেও আক্কেলপুর পুরাতন বাজার বণিক সমিতির পরিচালনা ও হস্তক্ষেপে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করেন। উক্ত সমিতি জানান আমাদের জয়পুরহাট জেলার পার্শ্ববতী সীমান্তঘেশা দেশী হচ্ছে ভারত যার ফলে ভারতে চামড়ার দাম অনেক বেশি। যার কারণ বর্তমানে আমাদের দেশে বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানিরা সরাসরি চামড়া কিনতে পারছেন যা আমাদের দেশে বর্তমানে সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছেন। চামড়া কিনলেও জ্বালা না কিনলেও জ্বালা। ট্যানারী মালিকরা যদি আমাদেরকে খুব সামান্য লাভ দিয়ে নগদে চামড়া কিনে নেন তাহলেই আমরা খুশি হবো। তবে সরকার যদি ব্লু চামড়াটি বৈধ ভাবে রফতানি করার ব্যবস্থা করলে তাহলে চামড়া শিল্পটি আবারও চাঙ্গা হবে বলে আমরা আশা করছি।
উল্লেখ্য বিষয় এই যে আক্কেলপুর উপজেলা ঘুরে জরিপ সূত্রে পাওয়া যায়। এবারের কোরবানির ঈদের বাজারে ৪৭ হাজার গরু, ৪৩ হাজার খাসি ও ১৩ হাজার ভেড়ার চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। যাহার আনুমানিক মূল্য ৪ থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য বিষয় এই যে আক্কেলপুর উপজেলা ঘুরে জরিপ সূত্রে পাওয়া যায়। এবারের কোরবানির ঈদের বাজারে ৪৭ হাজার গরু, ৪৩ হাজার খাসি ও ১৩ হাজার ভেড়ার চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। যাহার আনুমানিক মূল্য ৪ থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা।