আপনাদের যা ইচ্ছে সাজা দিয়ে দেন আদালতে হাজির হতে অনীহা প্রকাশ খালেদা জিয়া।
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে আদালত স্থানান্তরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আর কখনো আদালতে হাজির হতে অনীহা প্রকাশ করেছেন বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির হয়ে বেগম জিয়া বলেন, ‘এখানে ন্যায়বিচার হবে না। যত ইচ্ছে সাজা দিন।’
একপর্যায়ে বেগম জিয়া আদালতে বলেন, ‘এখানে ন্যায় বিচার নেই। যা ইচ্ছে তাই সাজা দিতে পারেন। যত ইচ্ছে সাজা দিতে পারেন। আমি অসুস্থ। আমি আদালতে বারবার আসতে পারবো না। আর এভাবে বসে আমার পা ফুলে যাবে। আমার সিনিয়র কোনো আইনজীবী আসেনি। এটা জানলে আমি আসতাম না।’
পরে আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মূলতবি করা হয় মামলার বিচারকাজ।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা খান বলেন, ‘ম্যাডাম নিজে আদালতে বলেছেন, আমি অসুস্থ। আমার চিকিৎসকের রিপোর্ট দেখলে বুঝতে পারতেন, আমার শারীরিক অবস্থা কি। আমার শরীর কাঁপছে। ভবিষ্যতে আমি আর এখানে আসবো না। আপনারা তো সাজা দেওয়ার জন্য আনতে চান? আপনাদের যা ইচ্ছে সাজা দিয়ে দেন। আমাকে আর এখানে আনতে পারবেন না, আমি আর এখানে আসবো না।’
আগামী ১২ সেপ্টেম্বর তারিখ দেওয়া হয়েছে কিন্তু ম্যাডাম বলছেন যে, ‘আমি আর আসবো না।’
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আদালত স্থানান্তরে বিষয়টি জানানোর পরও বেগম জিয়ার আইনজীবীরা উপস্থিত হননি।’
তিনি বলেন, ‘যে দিন তার বিরুদ্ধে এজাহার হয়, সেখান থেকে চার্জশিট হয় এবং তার পরবর্তীতে বিচারের রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিনই এধরণের আশঙ্কা করেন যে, আমরা ন্যায় বিচার পাবো না।’
দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘ন্যায় বিচারের আজকের দিন দেখেন। তার আইনজীবী নেই। তাঁর পক্ষে কেউ কথা বলছেন না। তিনিই কথা বলছেন। আমরা তাকে সুযোগ দিয়েছি। সুতরাং ন্যায় বিচার তিনি যাতে পেতে পারেন সেই ব্যাপারে তাকে আমরা সাহায্য সহযোগিতা করবো।’
আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘তাদেরকে আমরা এই গেজেট নোটিফিকেশন পৌঁছে দিয়েছি। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী না আসার কারণে কোনো আসামির বিচারিক কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সেই কারণে আজ বিচারের কার্যক্রম পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে বেগম জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেছেন, ‘এ বিষয়ে তাদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এই আদালত আলিয়া মাদ্রাসা থেকে জেলখানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো নোটিশ দিয়ে অবহিত করা হয়নি। সেই কারণে আমাদেরকে আলিয়া মাদ্রাসায় যেতে হয়েছে।’
বেগম জিয়ার মামলাকে কেন্দ্র করে পুরনো কারাগার জুড়ে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিন দফা তল্লাশি শেষে আদালতে প্রবেশ করতে দেয়া হয় সাংবাদিকদের। এমনকি আইনজীবী ও সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনও জমা নেয়া হয়।