গাংনীর আযান গ্রাম থেকে ছাত্রীকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে আরবি শিক্ষক
মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আযান গ্রাম থেকে এক ছাত্রী নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে ঐ ছাত্রীর শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার (০৮-০৯-২০১৮ ইং) সকালে। মেয়ের মা জানান, আমার মেয়ে ৭ম শ্রেনীর পাশা পাশি আযান গ্রামের সব্জি বিক্রেতা জিল্লুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিবের কাছে প্রায় চার মাস ধরে আরবি শিক্ষা গ্রহন করে আসছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে গ্রামের মক্তবে সে আরবি শিক্ষা গ্রহন করতে যেত।
মেয়ের মা আরো বলেন, আমরা বুঝতেও পারিনি যে মেয়ের সাথে তার শিক্ষক এমন করবে। ঘটনার দিন ঐ ছাত্রী খালার বাড়ি এ উপজেলার চেংগাড়া গ্রামে যাবে বলে বায়না ধরলে তার মা তাকে একটি ভ্যান ঠিক করে দেয়। বেলা ১১টার দিকে সে ভ্যানে করে সে খালার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এর আগেও সে এভাবে খালার বাড়ি গেছে বলে তার মা জানান।
এদিকে মেয়ের মা বিকেলের দিকে মেয়ের খালার কাছে মেয়ে ঠিক মতো পৌছেছে কিনা খোঁজ নিতে চাইলে মেয়ের খালা সোহাগি জানান, এখনও তার মেয়ে আসেনি। এখবর শুনে মেয়ের মা-বাবা খোঁজ খবর শুরু করলে সকাল থেকে তার আরবি শিক্ষকও এলাকায় সকাল থেকে নেই জানতে পেরে তারা বুঝে নেই ঐ আরবি শিক্ষকই তার মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছে।
আরবি শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রায় ৭ বছর আগে একই উপজেলার জোড়পুকুরিয়া গ্রামে বিয়ে করে। ছাত্রীকে নিয়ে চলে যাওয়ার ঘটনা শুনে হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রথম স্ত্রী তার বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যায় বলে জানান হাবিবের বাবা জিল্লুর রহমান। এদিকে মেয়ে না পেয়ে মেয়ের বাবা-মা স্থানীয় মাতব্বরদের জানালে তারা সুরাহা করবে বলে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত তার কোন সমাধান হয়নি।
এদিকে মেয়ে নিখোঁজ বা মেয়েকে নিয়ে গেছে এ মর্মে গাংনী থানায় কোন অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ দিতে চেয়েছি কিন্তু স্থানীয় গ্রাম্য মাতব্বর আবুল বাশার বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করে দেওয়া হবে এবং মেয়ে ও ছেলেকে ফেরত নিয়ে আসা হবে বলে কয়েকদিন ধর্য্য ধরতে বলে যে কারণে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে এবার থানায় অভিযোগ দেবে বলে জানান মেয়ের বাবা। এদিকে এ ঘটনাকে পুজিঁ করে কয়েকজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেব বলে ছেলের বাবার কাছ থেকে টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা যায়। বিষয়টি এখন এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
একদিকে মেয়ে কোথায় আছে মেয়ের বাবা-মা কেউ জানে না। অন্যদিকে ছেলে কোথায় আছে সেটাও ছেলের বাবা জানে না। এলাকাবাসির প্রশ্ন তারা কোথায় আছে কী অবস্থায় আছে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে , নাকি মেয়েকে বিয়ের নামে অপহরণ করেছে তা যখন কেউ জানে না তখন ছেলে মেয়ের অভিভাবক এখন পর্যন্ত কেন আইনের আশ্রয় নেয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের অনেকেই বলেন, ছেলের বাবা ঠিকই জানেন ছেলে মেয়ে কোথায় আছে। কারন ছেলের বাবা-মা’র মুখে কোন চিন্তার ছাপ দেখা যায় না।
সব কিছুই স্বাভাবিক আছে বলে তিনি মনে করেন। ছেলের বাবার সাথে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে ও ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। অপর দিকে মেয়ের মা-বাবা মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। তারা এখন থানায় অভিযোগ করবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান।
এ দিকে ঐ গ্রামের মাতব্বর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আবুল বাশার জানান, ছেলের বাবাকে আমরা চাপ দিলে সে ২ দিন সময় চাই তার ছেলেকে হাজির করার জন্য কিন্তু অদ্যবধি তাকে তার বাবা হাজির করতে পারেনি। আগামী কাল মেয়ের বাবা আইনের আশ্রয় নেবে এবং আমরা যেহেতু ন্যায়ের পেেক্ষ তাই ন্যায় সংগত যেটা হয় তাতে আমার সহযোগিতা থাকবে।