দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম বাগেরহাট ইসলামী আদর্শ ক্যাডেট একাডেমীতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ত্রি-মুখি শিক্ষা
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট
বাংলা, ইংরেজী ও আরবি ভাষা এ ত্রি-মুখি শিক্ষার সফল সমন্বয় ঘটিয়েছে বাগেরহাট ইসলামী আদর্শ ক্যাডেট একাডেমী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিঃ ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করে বাগেরহাট ইসলামী আদর্শ ক্যাডেট একাডেমী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কোমল মতি শিশুদের ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে রেখে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বাংলা, ইংরেজী, গনিত ও প্রয়োজনীয় আরবি শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
হাতের লেখা সুন্দর করতে চালিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত প্রশিক্ষণ। তথ্য প্রযুক্তিতে শিশুদের আগ্রহ বৃদ্ধি করতে নিয়মিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণও দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সাথে নিজেদের প্রতিষ্টানকে শতভাগ ডিজিটাল প্রতিষ্টানে রুপান্তরিত করেছে কর্তৃপক্ষ। ভর্তি, বেতন পরিশোধ, রেজাল্টসহ সবকিছুই চলে অনলাইন পদ্ধতিতে।
শিক্ষার্থীদের শ্রেনী কক্ষে উপস্থিতি নিশ্চত করাও হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
এর পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সামনে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের রয়েছে একই ধরণের পোশাক।
এর পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সামনে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের রয়েছে একই ধরণের পোশাক।
মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাট শহরের ছোটকবর খানা মোড়ে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে দেখা যায় প্লে থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাসে শিশুদের পাঠদান করছে শিক্ষকরা। শিক্ষকদের অনুমতি নিয়ে আমরা ঢুকে পড়ি শ্রেনীকক্ষে। কথা হয় কোমল মতি শিশুদের সাথে।
৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাহিরা আক্তার বলেন এখানে ক্লাস করতে অনেক ভালো লাগে, স্যাররা কখনো রাগ করেন না।
পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মোঃ জুনায়েদ হোসেন বলেন, স্যাররা আমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেন, কোনো পড়া না বুঝলে বারবার বুঝায়ে দেন।
প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মারিয়ার সাথে আসা অভিভাবক মরিয়ম আক্তার জানান প্রতিষ্ঠানটি বাগেরহাটের অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যাতিক্রম। ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা, পাঠদান সব বিষয়ে শিক্ষকরা খুবই যতœবান।
অন্য এক অভিভাবক তিস্তা নার্গিস বলেন, ছেলেকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে কোনো চিন্তায় থাকতে হয়না। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা থাকায় বাড়তি ঝামেলাও হয়না। এছাড়াও বিদ্যালয়ে পৌঁছালে ফোনে অটোমেটিক উপস্থিতির মেসেজ চলে আসে।
প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল সফটওয়্যার ব্যাবস্থপনার দায়িত্বে থাকা ‘নেটিজেন আইটি’র প্রতিনিধি সবুজ হোসেন বলেন সরকারের ডিজিটালাইজড শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গঠনের পরিকল্পনা সেটিকে মাথায় রেখে আমাদের প্রতিষ্ঠান কাজ করে, আর সেই দিক থেকে বাগেরহাটের অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বাগেরহাট ইসলামী ক্যাডেট একাডেমী এগিয়ে।এখানের প্রায় সকল শিক্ষক আইটি বিষয়ে দক্ষ হওয়াতে আমাদের কাজ সহজ হয়ে গেছে, এবং প্রতিষ্ঠানকে নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে সাঁজাতে প্রতিষ্ঠান কর্তূপক্ষ সর্বদা সচেষ্ট।
শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বইতে পাঠদান করে থাকি। আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান, মানষিক ও শারীরিক বিকাশে আমরা যথেষ্ট যতœবান। যা ইতোমধ্যে প্রমানিত হয়েছে। দুই বছর পিএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাশের পাশাপাশি এ প্লাস এবং বৃত্তিও পেয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। প্লে থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত বেসরকারী ভাবে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, সেখানেও সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে আমাদের শিক্ষর্থীরা।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মুফতি রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের সামাজিক ভাবে পরিপূর্ণ আদর্শ মানুষ গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। শিক্ষার্থীদের আমরা এমন ভাবে শিক্ষাদান করি যাতে একজন শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেনী পাশের পরে যে কোনো শিক্ষা মাধ্যমেই পড়াশুনা করতে পারে।
সে ইচ্ছা করলে সাধারণ শিক্ষা, আলিয়া বা হেফজ যেকোনো মাধ্যমেই সাবলীল ভাবে তার শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারে। এছাড়াও আমরা প্রতি মাসে অভিভাবকদের সাথে মত বিনিময়, প্রতি সপ্তাহে শিক্ষকদের নিয়ে সাধারণ সভার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি, সুবিধা, অসুবিধা যাচাই করে থাকি। ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়তের সুবিদার্থে নিজস্ব পরিবহন ব্যাবস্থাও রয়েছে আমাদের।
সর্বপরি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট হয়ে নানা শ্রেনী পেশার মানুষ তাদের সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে বেছে নিচ্ছেন এই প্রতিষ্টানটিকে।
বাগেরহাট ইসলামী আদর্শ ক্যাডেট একাডেমীর স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা এমএ মান্নান তালুকদার জানান, দেশে প্রচলিত বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেকোন একটি বিষয়ের উপর শিক্ষা দান করে।
যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় সকল প্রকার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাস্তব জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মূখীণ হতে হয়। তাই শিশুদের পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস। এছাড়া বাগেরহাটে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।