খুলে দেয়া হলো লালমনিরহাটবাসীর স্বপ্নের শেখ হাসিনা সেতু
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট
লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার সীমান্তে কাকিনা-মহিপুর এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর নবনির্মিত ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ খুলে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে নিমার্ণের পর রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর পর পরেই ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি খুলে দেওয়া হয় যান ও লোকজন চলাচলের জন্য।
মহিপুর-কাকিনা পয়েন্টে এলজিইডি’র বাস্তবায়নে নবনির্মিত ৮৫০ মিটার দৈর্ঘের এই সেতুটি নির্মাণকালে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু হিসেবে প্রচার হয়। পরে লালমনিরহাট জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ও দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের বাস্তবরূপ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার নামে নতুন এই সেতুর নামকরণ করা হয়। এ সেতু নির্মাণের ফলে একসময়ের ‘মঙ্গাপ্রবণ’ এ এলাকার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
সেতুর সুবিধাভোগী বাসিন্দারা জানান, তিস্তা নদীর এক পাশে রংপুর, আরেক পাশে লালমনিরহাট জেলা। সে জন্য লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরসহ চারটি উপজেলার লোকজনকে রংপুরসহ সারাদেশে যাতায়াত করতে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঘুরতে হতো। এ অবস্থায় তিস্তা নদীর ওপর একটি সেতুর স্বপ্ন সেখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের। সেই স্বপ্ন সত্যি হয় রোববার সকালে। এর আগে ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাটে আওয়ামীলীগের এ জনসভা থেকে সেতুর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ দিকে নবনির্মিত ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু এলাকায় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি, সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পকির্ত স্থায়ী কমিটি’র সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি, সংসদ সদস্য সফুরা বেগম রুমি, লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ ও রংপুর জেলা প্রশাসক এনামুল হাবিব।
উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর দুই পাশে ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ উল্লেখ করে লাগানো হয়েছে ফলক। লাল-সাদা রঙে সজ্জিত সেতুর ওপর উড়ছে রঙিন পতাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে সেতুর আশপাশের এলাকাজুড়ে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুনও। ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে সেতুর উত্তরপ্রান্তে তৈরী করা হয় বিশাল প্যান্ডেল।
নতুন এই সেতুর উদ্বোধন বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পকির্ত স্থায়ী কমিটি’র সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি বলেন, সেতুটি নির্মিত হওয়ায় লালমনিরহাট জেলার জনগণের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরন হয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার একটি মাইলফলক হিসেবে এটি বিবেচিত হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরন্তর উদ্যোগ ছাড়া এ সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হতো না। এই সেতু নির্মাণের ফলে রংপুর ও লালমনিরহাটের মধ্যকার যোগাযোগ সহজতর হয়েছে।