সোলস ডে’ উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ সমাধিতে আলো জ্বেলে চিরশান্তির প্রার্থনা
হলুদ গাঁদা আর লাল গোলাপের পাপড়ি বিছানো সমাধিতে জ্বলছে মোমমাতি-আগরবাতি। আলোয় ভরা সে সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে মৃত ব্যক্তির আত্মার চিরশান্তি প্রার্থনা করছেন স্বজনেরা।
তাদের কারও কারও চোখে জল। কেউ দাঁড়িয়ে আছেন নীরবে। হয়তো না ফেরার দেশে চলে যাওয়া মানুষের স্মৃতি ভেসে উঠছে মনের আঙিনায়।
কেউ আবার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ফাদার, ব্রাদার, সিস্টারদের সামনে মুখটি বাড়িয়ে দিচ্ছেন। খ্রিষ্ট প্রসাদের স্বাদ নিয়ে বন্ধ করছেন দু’চোখ। ফাদারের ধর্মীয় প্রার্থনার সঙ্গে শিল্পীদের কণ্ঠে ভেসে আসছে ধর্মীয় গানও।
শুক্রবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরের পাথরঘাটা ক্যাথলিক চার্চের পাশের সমাধির চিত্র ছিলো এমনই। যেখানে ‘অল সোলস ডে’ উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ সমবেত হয়েছিলেন মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায়।
বিকেল ৫টার দিকে প্রার্থনা কার্যক্রম শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। পাথরঘাটা ক্যাথলিক চার্চের পাল পুরোহিত সুব্রত বনিফাস টলেন্টিনো পুরো প্রার্থনা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এ সময় তিনি বলেন, যারা আমাদের স্বজন ছিলেন, যাদের ভালোবাসা আমরা পেয়েছি কিংবা যাদের আমরা ভালবেসেছি, মৃত্যুর পর যেন তাদের ভুলে না যাই। তাদের আত্মা যেন চিরশান্তি পায়। সবাই যেন প্রভুর সান্নিধ্য পান।
সমাধিস্থলে মায়ের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন লিন্ডা লায়োনেট। কথা প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে জানান, মা আমাদের ফেলে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। একদিন আমাদেরও চলে যেতে হবে। তাই মাসহ যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের পবিত্র আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করেছি।
বেসরকারি কর্মকর্তা জেমস গোমেজ বাংলানিউজকে জানান, নভেম্বর মাসের এদিন অল সোলস ডে তে আমরা পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন- যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি এবং তাদের শান্তি কামনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের মধ্যে পরকালীন চিন্তা জাগ্রত হয়। আমাদেরও যে একদিন এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে সে কথা স্বরণে আসে।
প্রতিবছর ২ নভেম্বর বিশ্বজুড়ে খ্রিষ্টান সম্প্রদায় ‘অল সোলস ডে’ পালন করে আসছে। এ দিন মৃত ব্যক্তির শান্তি কামনায় সমাধিতে এসে ফুল আর মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের স্বজনেরা।