লালমনিরহাটে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আ’লীগের মোতাহার হোসেন
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট
সীমান্তবর্তী পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলা নিয়ে গঠিত ১৬-লালমনিরহাট-১ আসন। তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরে ভারতীয় সীমান্তে অবস্থিত এই দুই উপজেলা বিভিন্ন কারণে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিলো দীর্ঘ দিন। এ আসনে দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু ও জাতির জনকের সহযোদ্ধা আবেদ আলী এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন।
১৯৮৬ সালে এ আসনটি জাতীয় পার্টির দখলে চলে যায়। ৪ বছর পর ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে বিএনপি ১ বার ও আওয়ামীলীগ ১ বার সরকার গঠন করলেও আসনটি দীর্ঘ ১৪ বছর জাতীয় পার্টির দখলে থাকে। সেই থেকে এই দুই উপজেলা রাজনৈতিক কারণে উন্নয়ন থেকে অনেক পিছে পরে যায়। ২০০১ সালে জাতীয় পার্টির দূর্গ ভেঙ্গে আসনটি দখল করেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন এমপি।
কিন্তু ওই সময় বিএনপি সরকার গঠন করায় উন্নয়ন করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হন তৎকালীন এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন। ২০০৮ সালে মোতাহার হোসেন পুনারায় সংসদ সদস্য নির্বাচত হয় এবং আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে পাল্টে যেতে থাকে গোটা লালমনিরহাট জেলার উন্নয়নের চিত্র।
মোতাহার হোসেন এম পি প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোলকান্ড ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু এবং দেশের সকল বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারী করণে তিনি ব্যাপক ভুমিকা রাখেন। ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় একটি বিল্পব ঘটে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন পর পর ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বুড়িমারী-লালমনিরহাট রেল পথ ও মহা সড়ক সংস্কার, তিনবিঘা আঙ্গোরপোতা দহগ্রাম হস্তান্তর, তিস্তা নদীতে ২য় সড়ক সেতু নির্মাণ, ধরলা সেতু নির্মাণ, পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা রাবারড্যাম নির্মান, লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ভবন, নার্স টেনিং ভবন ও শিক্ষক প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন ও ভবন নির্মাণ, হাতীবান্ধায় ৬ তলা বিশিষ্ট উপজেলা পরিষদ ও থানা ভবন নির্মাণ, প্রতিটি ইউনিয়নের ভবন নির্মাণ, বিলুপ্ত ছিটমহল গুলো ব্যাপক উন্নয়ন, জেলার প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস নিমার্ণসহ হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ গুলোতে ভবন নির্মাণে তার অবদান ছিলো উল্লেখ করার মত। হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলা তিস্তা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়া এই দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর নদী ভাঙ্গণের শিকার হয়ে আসছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন প্রতিটি নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবারকে পুর্ণবাসন করেছেন। যে কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন রাজনৈতিক জনপ্রিয়তার উর্দ্ধে গিয়ে সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় ডুবে আছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান ভেলু বলেন, মোতাহার হোসেন শুধু এলাকার উন্নয়ন করেনি। দেশের উন্নয়নেও তার ভুমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে অনেক দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি সেই দায়িত্ব গুলো সফলতার সাথে পালন করেছেন। তিনি ২০০১ সালে বিরোধী দলীয় হুইপ ছিলেন, ২০০৮ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৪ সাল থেকে ওই মন্ত্রাণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন। মোতাহার হোসেন ২০০৫ সাল থেকে পর পর দুই বার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট সদস্য, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য এবং বানিজ্য মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
হাতীবান্ধা সরকারী আলিমুদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সরওয়ার হায়াত খান বলেন, মোতাহার হোসেন রাজনৈতিক ভাবে যেটুকু জনপ্রিয় তার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় ব্যাক্তি মোতাহার হোসেন হিসেবে। তার কাছে কোনো সমস্যায় শুধু স্বাধীনতা বিরোধী ছাড়া সবাই সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি তার ১৫ বছর সংসদ সদস্য থাকাকালীন গোটা জেলাসহ হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার যে উন্নয়ন করেছেন। তা বলে শেষ করা যাবে না। এখন শুধু বাকি তিস্তা নদীর বাঁধ নিমার্ণ। তিনি কথা দিয়েছেন, আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় এলে তিস্তা নদীর বাঁধ নিমার্ণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম লাজু বলেন, হাতীবান্ধা-পাটগ্রামের উন্নয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন এমপি’র বিকল্প নেই। তার আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন নিশ্চিত, তবে জোট গত ভাবে নির্বাচন হলে কে মহাজোটের প্রার্থী হবেন, সেটা দেখার বিষয়। মোতাহার হোসেন ছাড়া বিকল্প কেউ প্রার্থী হলে আসনটি আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে।