মালয়েশিয়ায় নির্বিঘ্নে কর্মী পাঠাতে তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ডাটা ব্যাংক
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে নির্মাণ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় ডাটা ব্যাংক। কর্মী নির্বাচনে জেলা পর্যায়ে রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস খোলার পাশাপাশি, তাদের ব্যাংক ঋণ দেয়া এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন, জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার সভাপতি এবং প্রবাসীকল্যাণ সচিব।
কর্মী নির্বাচনে এজেন্সির পরিবর্তে, স্থানীয় পর্যায়ে বায়রা'র অফিস খোলার পাশাপাশি, খরচ কমাতে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী মধ্যসত্ত্বভোগীদের নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আধুনিক জীবনযাত্রা আর ভালো উপার্জনের স্বপ্ন নিয়ে প্রতিবছরই মালয়েশিয়ায় ছুটে যায় অসংখ্য বাংলাদেশি। ১৯৭৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় দশ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন।
তবে, দেশটির সরকার, গত সেপ্টেম্বরে হঠাৎ করেই কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। এ সংকট কাটাতে সম্প্রতি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সাক্ষাতে বাজার খুলে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। এ অবস্থায় আগামী বুধবার দু'দেশের দ্বিপাক্ষিক ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠক বসছে।
এদিকে, অনিয়ম ঠেকাতে এবার বায়ো রিক্রুটমেন্ট পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানোর পাশাপাশি খরচ কমানোর কথা জানান বায়রা সভাপতি। তবে ডাটাবেজে কর্মীর নাম তালিকাভূক্তিতে সতর্ক না থাকলে পুরো প্রক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, বায়ো-রিক্রুটমেন্ট সিস্টেম, হায়ারিং প্রসেস থেকে আরম্ভ করে রি-ইন্টিগ্রেশন পর্যন্ত পুরো সাইকেলটাই এই প্রসেসের মধ্যে থাকবে।
রামরু-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, তারা এখান থেকে না নিয়ে, ওদের নামটা এই বায়োমেট্রিক সিস্টেমের মধ্যে যদি ঢুকিয়ে দেন, সেখানে এ পদ্ধতিতে গ্যারান্টি কোথায় যে আমি শুধু এখান থেকেই নেবো?
বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, মানি-ট্রানজিকশন হতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে, যে কর্মীরা বিদেশে যাবেন, তাতে যে পেমেন্টটি লাগে, সেই পেমেন্টটিও ব্যাংক লোন আকারে দেবে।
খরচ কমিয়ে আনতে সরাসরি কর্মী সংগ্রহ করার জন্য জেলা পর্যায়ে অফিস খোলার সুযোগ পাবে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যসত্ত্বভোগীদের নিবন্ধনের আওতায় আনার পাশাপাশি, কর্মী নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনতে এজেন্সির পরিবর্তে স্থানীয় পর্যায়ে বায়রার অফিস খোলা উচিত।
মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে মালয়েশিয়া সরকারের প্রস্তাবেই কর্মীদের জন্য ডাটা ব্যাংক করা এবং ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থার কথা জানান প্রবাসীকল্যাণ সচিব রৌনক জাহান। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সরকারেরই তাগিদ ছিল যেন আমরা ডাটাবেস করি, ব্যাংঙ্কিং চ্যানেলে টাকা-পয়সা দিই। আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তো এজন্যই আমাদের তৈরি করা।
দ্বিপাক্ষিক ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারেই শিগগির মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে বলে আশার কথা জানান তিনি।