৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগের পর দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে সাময়িক প্রত্যাহার
ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগের পর দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ঘুষ দেয়ার প্রমাণ মিললে বিচারের আওতায় ডিআইজি মিজানও আসবে।
নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক থেকে প্রত্যাহার করে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয় বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে। পরে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ দুর্নীতির নানা অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
সে অভিযোগ প্রথমে তদন্ত করেন কমিশনের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি। পরে সে দায়িত্ব বর্তায় পরিচালক এনামুল বাছিরের ওপর।
তবে এবার সেই দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তার দাবি, মিজানুর রহমানকে দায়মুক্তি দিতে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার জন্য চুক্তি করেন দুদক পরিচালক এনামুল বাছির। যার মধ্যে গত ১৫ জানুয়ারি রমনা পার্কে বাজারের ব্যাগে করে নগদ ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন দুদক পরিচালক। আর বাকি ২৫ লাখের মধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি দেন ১৫ লাখ।
এর মধ্যে অভিযুক্ত ওই দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে মিজানুর রহমানের ফাঁস হওয়া ফোনালাপেও উঠে আসে ঘুষ দেয়া-নেয়ার বিষয়টি। এছাড়া সিসিটিভির ফুটেজে পুলিশ প্লাজায় মিজানুর রহমানের স্ত্রীর দোকানে মিজানুর রহমানের সঙ্গে এনামুল বাছিরকে সাক্ষাৎ করতেও দেখা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারের চাপে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া যায়নি বলে ডিআইজি মিজানকে জানান দুদক পরিচালক এনামুল বাছির। ফোনালাপে এনামুল বাছির বলেন, 'চেয়ারম্যান এবং কমিশনারের চাপে বাধ্য হয়েছি এরকম রিপোর্ট দিতে। আপনি একটা জিনিস বুঝেন আমি কিন্তু এক সপ্তাহ আগে রিপোর্ট দিয়েছি। কোন মিডিয়ায় কি কোন কথা আসছে! আপনি যদি চান ফেরত নিতে পারেন। আমি যখন চেয়ারম্যানকে বললাম পারলেতো উনি আমাকে মারে।’
এদিকে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দুদক। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, 'কমিশনের তথ্য অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করা কমিশনের চাকরির পরিপন্থি। এছাড়া এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এসেছে। তদন্তের স্বার্থে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
এছাড়া ডিআইজি মিজানুর রহমানের দুর্নীতি তদন্ত করতে এনামুল বাছিরের পরিবর্তে নতুন কর্মকর্তাও নিয়োগ দিয়েছে দুদক।