গাজীপুর শ্রীপুরে পল্লী বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন
শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ আব্দুর রহিম
পনেরো দিন যেতে না যেতেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে মিটারে অন্ধকার রাতে হঠাৎ করেই প্রিপেইড মিটারের ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে জ্বলছে না আলো মনে হয় বাপের ভিটা বিক্রি করে বিদ্যুৎ বিল রিচার্জ করতে হবে চাইনা সেই প্রিপেইড মিটার এ নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে করেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কয়েক হাজার ভুক্তভোগী গ্রাহক ।
১৯ জুন বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মাওনা জোনাল অফিসের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানবপ্রাচারীর শেষে মহাসড়কে বিক্ষোভ করে প্রতিবাদ জানায় গ্রাহকেরা।
পরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয় ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর শত শত গ্রাহক। এসময় বক্তারা বলেন, পূর্বের বিদ্যুতের মিটারের চাইতে প্রিপেইড মিটারে বিল বেশি আসে। কিছুদিন আগে অনেকের বাড়িতে প্রিপেইড মিটার প্রতিস্থাপন করে দেয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
যাদের অধিকাংশ লোকজনেই বাড়ি ভাড়ার উপর নির্ভরশীল, ভাড়া পাওয়া যায় মাসের নির্দ্দিষ্ট সময়ে। কিন্তু প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পর নতুন সমস্যায় দেখা দিচ্ছে। এখন যে কোন সময়ই মিটারের টাকা শেষ হয়ে যায়, রিচার্জের তেমন কোন ব্যবস্থা থাকে না। এছাড়াও কোন খাতে কত টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে তা জানারও ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা এই প্রিপেইড মিটার চাইনা।
সাংবাদিক জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও শেখ জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্ডল বুলবুল,মাওনা চৌরাস্তা ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ সরকার, জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম শিমুল, জেলা মহিলালীগ নেত্রী আঞ্জুমান আরা শিউলী প্রমুখ।মাওনা চৌরাস্তা ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ সরকার বলেন, ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর গ্রাহকের মধ্যে এখনও অনেক লোক গরীব ও অসহায়।
হাজার হাজার গ্রাহক আছেন যারা কারখানা শ্রমিক। তারা এক মাস কাজ করে পরের মাসের ১০তারিখের পর বেতন পেয়ে থাকে। আগে মাসের বেতন পেয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হতো। কিন্তু প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পর এখন অগ্রীম টাকা জমা দিলেই বিদ্যুৎ মিলছে। তাই ক্ষুদ্র ও মাঝারী গ্রাহকদের অগ্রিম টাকা জমা দিয়ে অনেকের পক্ষে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে এসব ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুক্ষিন হওয়ার আশংকায় ভোগছে।
শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্ডল বুলবুল তার বক্ত্যবে বলেন, হঠাৎ করেই যখন তখন কার্ডের টাকা উধাও হয়ে যাওয়া,রিচার্জের পর শুরুতে মাত্রারিক্ত টাকা কেটে নেওয়াসহ নানা অনেক সমস্যার সম্মুক্ষিন হচ্ছে । অবিলম্বে এই প্রিপেইড মিটার তুলে নিয়ে পোস্ট পেইড মিটার পূণসংযোগের জোর দাবি জানাই। পাশাপাশাী বিদুৎ পেতে গ্রাহকদের হয়রানি ও প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে সরকারের দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছি।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ মাওনা জোনাল অফিসের উপ:মহাব্যবস্থাপক কামাল পাশা জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রেই আধুনিকায়ন হচ্ছে। প্রিপেইড মিটার স্থাপন সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। আর সেই সিদ্ধান্তের আলোকেই গ্রাহকদের পুরাতন মিটারের স্থলে প্রিপেইড মিটার প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোন ধরনের অবকাশ নেই।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, পল্লী বিদ্যুতের বিল জটিলতা থেকে গ্রাহকদের মুক্তি এনে দিবে প্রিপেইড মিটার। যত রিচার্জ-তত বিদ্যুৎ- এ নিয়মেই চলবে গ্রাহক। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সবকিছু এগিয়ে চলছে। তাই পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের এ পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে বলেও জানান তিনি।