কালিয়ায় দুটি তদন্ত দলের শুনানী গ্রহণ
নড়াইল প্রতিনিধি
নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের এক ভিআইপির ফরমায়েশ খাটতে তিন ঘন্টা ফেরী চলাচল বন্দ রাখায় বিনা চিকিৎসায় নড়াইলের কালিয়ার স্কুল ছাত্র তিতাশের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ ও দুপুরে নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের দুটি তদন্ত কমিটি তিতাসের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের শুনানী গ্রহণ করেছেন।
অপরদিকে, তিতাসের বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের বিদ্যালয় গুলোর ছাত্ররা তাদের সহপাঠীর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে কালিয়া সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। সকাল ১০টায় অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বনিকের নেতৃত্বে নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় কতৃক গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি কালিয়ার ইউএনওর কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে স্থানীয় লোকজনের ভিড় জমে যায়।
এরপর সেখানে তিতাসের মা সোনমনি ঘোষ ও বোন তনিষা ঘোষসহ ওই রাতে কাঠালবাড়ি ফেরী ঘাটে তিতাসের সাথে এ্যাম্বুলেন্সে থাকা স্বজনরা উপস্থিত হন। এরপর দুপুরে ২ মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ কতৃক অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল আহসানের নেতৃত্বে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি ও একই ভাবে তিতাসের স্বজনদের শুনানী গ্রহণ করেন। শুনানী শেষে নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় কতৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান সঞ্জয় কুমার বনিক বলেছেন, আমরা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। শুনানী শেষে যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ কতৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মো. রেজাউল আহসানও বলেছেন, তদন্ত কাজ চলছে।
তদন্ত শেষে ফরাফল জানা যাবে। অপরদিকে, তিতাসের বিদ্যালয় কালিয়া সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও প্যারি শংকর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের বিদ্যালয় গুলোর ছাত্ররা তাদের সহপাঠীর অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে কালিয়ার ইউএনওর কাছে স্মারক লিপি পেশ করেছে।
এর আগে তদন্ত কমিটির কালিয়ায় আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে ওইসব বিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসে। তারা তাদের সহপাঠীর মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের দাবিতে ও প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে। গত ২৪ জুলাই তিতাস একটি সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হলে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা ঢাকায় প্রেরণ করেন।
পরদিন ২৫ জুলাই তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে ওইদিন রাত ৮ টায় কাঠালবাড়ি ১নম্বর ফেরীঘাটে পৌঁছালে তারা জানতে পারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের একজন ভিআইপির অপেক্ষায় ফেরী চলাচল বন্দ রয়েছে। তার ভাইয়ের আশংকাজন অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি সেখানকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীসহ বিভিন্ন মহলে ধর্না দিয়ে কোন কাজ হয়নি।
রাত ১১টার দিকে ওই ভিআইপি’র গাড়িটি আসার পর ফেরী চলাচল শুরু হয়। কিন্তু ফেরী পার হতে না হতেই তিতাস বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।