জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলে এককভাবে হরতাল বা অবরোধ করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে কোন সুফল আসবে না : মির্জা ফখরুল
গণতন্ত্র ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐক্য হয়েছিলো, তবে বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে নিজেদের শক্তি যাচাইয়ে এই মুহুর্তে এককভাবে আন্দোলনে আছে বিএনপি।
সময় টেলিভিশনকে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের একের পর এক ব্যর্থতায় রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে।
ফখরুল বলেন, হঠাৎ করে এককভাবে হরতাল অবরোধ করে জনগণের সম্পৃক্ততা আশা করা যাবে না।
সরকারবিরোধী আন্দোলনে গত দশ বছরের অভিজ্ঞতা সময় সংবাদকে বলতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে আন্দোলন সফল না হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর সময় হয়তো অনেকটাই কাছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ১০ বছর ধরে চেষ্টা করেছি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামার। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করার। আমরা হরতাল, অবরোধ করেছি। কিন্তু এই সরকার এতো নির্মমভাবে এই অন্দোলনের প্রচেষ্টা নসাৎ করেছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টি করার জন্য।
বেগম জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল জানান, আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছেন তারা। বিশ দলীয় জোট কিংবা ঐক্যফ্রন্ট হারিয়ে যায়নি বলেও সাফ জানান তিনি।
তিনি বলেন, সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা দরকার। নিজেদের দলকে উজ্জীবিত করা দরকার। সব মিলিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করা জন্য যে আন্দোলন দরকার, সেই আন্দোলন আমরা শুরু করেছি শুধু বিএনপির ব্যানারে। তার মানে এই নয় যে আমরা ২০ দল বাদ দিয়েছি, ঐক্যফ্রন্ট বাদ দিয়েছে। অবশ্যই আমরা ২০ দল, ঐক্যফ্রন্টে আছি।
একাদশ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধি পাঠানোকে কেন্দ্র করে অনেক জল ঘোলা হলেও বিএনপির নির্বাচিতরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে বলে দাবি করেন দলটির মহাসচিব।
তিনি আরো বলেন, আমরা জনগণের সাথে কথা বলছি, এই যে বেগম জিয়ার উপর অন্যায় হচ্ছে সে কথা বলছি। এইটা কিন্তু অফিসিয়ালি চলে যাচ্ছে সব জায়গায়।
সরকারের তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, জবাবদিহিতার অভাবে প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ায় দেশ এখন তীব্র সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সমাধানে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।
মির্জা ফখরুল বলেন, যাদের জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতা করতে হয় না, তাদের সংকট হবেই। যার ফলে এখন কাঠামোগুলো ভেঙে পড়ছে, গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টাগুলো ভেঙে পড়ছে। তাহলে এই রাষ্ট্র কোথায় টিকে আছে, এই রাষ্ট্র তো নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বারবার নানা কর্মসূচী দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে পারেনি বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট কিংবা ঐক্যফ্রন্ট। এবার দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম বললেন, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করে আন্দোলন নামবেন তারা। তবে সে কর্মসূচীতে জনগণের সম্পৃক্ততা কতটা থাকবে তা সময়ই বলে দেবে।