বন্ধু ইমামের হাতে বন্ধু ইমাম খুন ঘটনা উম্মচন করলো এসপি হারুন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় সোনার বার কেনার কথা বলে কয়েক দফা লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় আসামী ওহিদুর জামান। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দিলে ২১শে আগস্ট রাত ৯টায় সোনারগাঁ থানাধীন মুগরাপাড়া ইউনিয়ন মল্লিকপাড়া বাইতুল জালাল জামে মসজিদের ইমাম দিদারুল ইসলাম খুন করে সে ঘটনায় জেলা পুলিশের টিম পেশাদারিত্ব পালনে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় মসজিদের ইমাম দিদারুল ইসলাম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে আসামী ওহিদুল জামানকে মাদারীপুরের শিবচর এলাকা থেকে বুধবার ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি সহ অন্যান্য আলামত উদ্ধারে করা হয়।
বুধবার বিকাল পৌনে ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ জেলা পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশিদ তিনি এ কথা বলেন ।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতার ওহিদুর জামান নড়াইলকালাবাড়ীয়া পশ্চিম পাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাক শেখ ওরফে টুকু। মূলত আর্থিক লেনদেন নিয়েই হত্যাকান্ডের শিকার হন দিদারুল। তার সাথে বিভিন্ন ব্যবসা সংক্রান্ত ব্যাপারে আর্থিক লেনদেন হয় তার চতুর বন্ধুর। পরবর্তীতে দিদারুল জানতে পারে যে ব্যবসা তার বন্ধু করতে চায় এসব ব্যবসা বৈধ নয় এবং তাই সে ব্যবসা থেকে সরে আসতে চায় এবং তার বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে দেয়া টাকা সে ফেরত চায়। এতেই তাকে হত্যা করতে পরিকল্পনা সাজায় বন্ধু।
পূর্বপরিকল্পনায় হত্যাকান্ডের আগের দিনও দিদারুলের সাথে দেখা করে তার সাথে চা খেয়ে হত্যার পরিকল্পনা সাজিয়ে যায় বন্ধু । পরে হত্যাকান্ডের দিন এশার নামাজের পর রাতের খাবার প্রস্তুত করার সময় দিদারুলকে কিছু নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হয়।
এতেই দিদারুল অচেতন হয়ে পড়েন এবং তার সেই রাতের খাবারও হত্যাকান্ডের পর সেই অবস্থায়ই উদ্ধার করে পুলিশ।স্থানীয় লোকজন ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানান, নারায়ণদিয়া বায়তুল জালাল মসজিদের আগের ইমাম চলে যাওয়ায় ২৬ জুলাই পাশের ছোট কাজিরগাঁও মসজিদের ইমাম দিদারুল এখানে নিয়োগ পান। এই মসজিদে জুমার নামাজ পড়িয়ে তিনি প্রশিক্ষণের কথা বলে ছুটি নেন।
২১ আগস্ট বিকেলে ছুটি থেকে ফিরে আবার নামাজ পড়ান তিনি। পরদিন ভোরে মুসল্লিরা ফজরের নামাজ আদায় করতে এসে ইমাম না আসায় তার রুমে গিয়ে ইমামের মরদেহ দেখতে পান। তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সোনারগাঁ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. অহিদ উল্লাহ লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলেন, ধারালো ছুড়ি দিয়ে জবাই করে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন করা হয়। এছাড়া পীঠের বাম অংশের গাড়ের নীচে কাটা দাগ, বাম বাহুতে ৪ থেকে ৫টি লম্বা লম্বা টাকা দাগ, গলাসহ সাড়া শরীর রক্তাত্ব ছিলো। পাশাপাশি উভয় হাত ও পায়ের আঙ্গুল বাকানো ছিলো। লাশটি উদ্ধারের সময় লুংগি ও বিছানাপত্র রক্তমাখা ছিলো।