ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে একের পর এক প্রভাবশালীরা ধরা পড়ছেন জব্দ টাকা যাবে কোথায়?
ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে একের পর এক প্রভাবশালীরা ধরা পড়ছেন। সঙ্গে বেড়িয়ে আসছে তাদের সংরক্ষণে থাকা প্রচুর টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার। সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করা হয়। এ সময় জি কে শামীমের বাড়ি ও অফিস থেকে নগদ প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা এবং ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর বা আমানতপত্র জব্দ করা হয়েছে।
এ ছাড়া রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বাসা থেকে বিপুল টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছে র্যাব। তারা ক্যাসিনোর লাভের টাকা বাসায় নিয়ে রাখতেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
সূত্রাপুরে তাদের বাড়িতে থাকা তিনটি ভল্ট থেকে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা ও আট কেজি (৭৩০ ভরি) স্বর্ণ পাওয়া যায়। এর পরে এনামুল হকের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি ভল্ট থেকে এক হাজার টাকার অনেকগুলো বান্ডিল পাওয়া যায়। তাতে প্রায় দুই কোটি টাকা রয়েছে বলে জানায় র্যাব। পরে রাজধানীর নারিন্দায় এনামুল হকের এক বন্ধুর বাসা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়।
বিপুল অঙ্কের টাকা পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডির গবেষণা কর্মকর্তা খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেট প্রণয়নের সময় একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ দেয় সরকার।
সে সময় তিনি আরো বলেন, দেরিতে হলেও ভালো যে, সম্প্রতি অবৈধ উপার্জন বা অর্থের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। এসব অভিযানে যেসব অপ্রদর্শিত অর্থ পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর মালিক বৈধ উৎস দেখাতে না পারলে তা সরকারের কোষাগারেই জমা হবে। তবে অভিযান সঠিকভাবে পরিচালিত হলে টাকার অঙ্ক ভাবনার বাইরে হতে পারে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন এ গবেষক।
এদিকে এসব অবৈধ অর্থের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ অর্জনকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে হবে। তাদের আগে নোটিশ দিতে হবে। এ টাকা কোথায় পেয়েছে সেটা জিজ্ঞাসা করতে হবে। সঠিক জবাব দিতে না পারলে অন্য ব্যবস্থা। আর দিতে পারলে তাদের আয়ের সঙ্গে যোগ করে আয়কর আদায় করা হবে।
অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, গত কয়েকদিনে পুলিশ র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম এসেছে, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের আয়ের উৎস দেখার জন্য এ তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আরো বলেন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের কাছে যে অর্থ পাওয়া গেছে, তাদের ট্যাক্স ফাইল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর এ করের বিষয় যাচাই করার জন্য সন্দেহভাজনদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তলব করা হয়েছে যাতে তারা টাকা সরিয়ে নিতে না পারে।