সেলিম প্রধানের বাড়িতে ২৯ লাখ টাকা-৮ কোটির চেক ও বিপুল বিদেশি মদ
অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূলহোতা সেলিম প্রধানের রাজধানীর বনানীর আরেক বাসায় অভিযান করে নগদ ২৯ লাখ টাকা, ৮ কোটি টাকার চেক, ২৩ দেশের ৭৭ লাখ বৈদেশিক মুদ্রা এবং বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে বনানীর ২ নম্বর সড়কের ২২ নম্বর বাসায় র্যাবের এ অভিযান শুরু হয়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারোয়ার বিন কাসেম বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই বাসায় অভিযানে যাওয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় সেলিম প্রধানের অফিস কাম বাসায় অভিযান চালানো হয়।
এদিকে, গতকাল দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে ব্যবসায়ী সেলিমকে নামিয়ে আনে র্যাব-১-এর একটি দল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাকে নিয়ে গুলশান-২-এ তার বাসা কাম অফিস ‘মমতাজ ভিশনে’ অভিযানে যায় র্যাব। প্রথমে সেলিমকে সঙ্গে করে ঘটনাস্থলে যায় র্যাবের তিনটি গাড়ি। পরে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০টিতে। ১৫ ঘণ্টা পার হলেও এখনো অভিযান চলছে। বাসায় ভেতরে র্যাব সদস্যরা অবস্থান করছেন। বাসার প্রধান ফটক ভেতর থেকে আটকানো। পরিচিত লোকজনকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। সেলিম প্রধান এখনো ওই বাসার ভেতরে র্যাবের সঙ্গে আছেন।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেলিমের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে অভিযানে এখন পর্যন্ত কী পাওয়া গেছে, সে সম্পর্কে র্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
এখন পর্যন্ত যতকিছু জানা গেছে তার বিরুদ্ধে :
সেলিমের কোম্পানির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পি২৪ গেমিং শুরুতে বিনোদনমূলক সফটওয়্যার তৈরি ও প্রকাশ করত। এখন তারা এশিয়ায় দ্রুত বড় হতে থাকা ক্যাসিনো কারবারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এশিয়ার লাইভ ক্যাসিনো মার্কেটে প্রতিষ্ঠানটি যেন এক নম্বরে যেতে পারে, সেই চেষ্টা আছে তাদের। ২০১৬ সালে তারা শুধু কম্পিউটার গেমস বাজারে আনত। পরে অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো কারবারে জড়িয়ে পড়ে। পি২৪-এর সঙ্গে বাংলাদেশে ১৫০টি অপারেটর এবং ক্যাসিনো যুক্ত আছে। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর অনলাইনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত করে দেয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। জুয়াড়িদের মুঠোফোনে লাইভ ক্যাসিনোতে যুক্ত করে দেয়ার সুবিধা তারা এনেছে ।
সেলিম প্রধানের সঙ্গে আর্থিক খাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সেলিম প্রধানের জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারসে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ছাপা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিসের নথিপত্রও ছাপানো হয়। তার এই প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংকের শীর্ষ ঋণখেলাপিদের একটি। ২০১৮ সালে ঋণটি পুনঃতফসিল করা হয়। সেলিমের কাছে ব্যাংকের পাওনা প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র বলছে, টেন্ডারবাজি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে সেলিম প্রধানের সম্পৃক্ততা রয়েছে।