দুই মন্ত্রীর বাগযুদ্ধ
বিতর্কিত রাজাকারের তালিকা নিয়ে বাগযুদ্ধে মেতেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী তালিকা চেয়েছেন, আমরা দিয়েছি। কিন্তু তা প্রকাশ করবেন কিনা তা আমাদের বলেননি। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের দাবি ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পেনড্রাইভ করে যে তালিকা আমাদের নিকট দিয়েছে তা পরিবর্তন না করে আমরা হুবহু সেটি প্রকাশ করেছি।’
বুধবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতা বিরোধীদের’ নামের তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, ‘দালাল আইনে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের নামের তালিকা আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। তবে এসব মামলায় যারা খালাস পেয়েছেন তাদের নামের তালিকাও নোট হিসেবে সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রী তালিকা চেয়েছেন, আমরা দিয়েছি। কিন্তু তা প্রকাশ করবেন কিনা তা আমাদের বলেননি।
ঠিকমতো যাচাইবাছাই না করেই এই তালিকা প্রকাশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর ‘রাজনৈতিক স্টান্টবাজি’ কিনা, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তা আমি বলবো না। আমি বিশ্বাস করি তিনি হয়তো ভালো কিছু করার জন্যই এই তালিকাটি চেয়েছিলেন।’
এই তালিকা করার মুক্তিদুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ৬০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেটা কোথায় খরচ হয়েছে- প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। কারণ তিনি একজন সিনিয়র মন্ত্রী।’
এই ধরনের বিতর্কিত তালিকা তৈরি করা ‘সাবোট্যাজ’ কিনা, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটা খতিয়ে দেখা হবে। আমার মন্ত্রণালয় যে কাজ করেছে, তাতে ভুল হতে পারে। তবে এ ধরনের একটি বড় কাজে সেই ভুল কতখানি সহনীয় তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করা হবে।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আমি মৌমাছির চাকে ঢিল মেরেছি। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পেনড্রাইভ করে যে তালিকা আমাদের নিকট দিয়েছে তা পরিবর্তন না করে আমরা হুবহু সেটি প্রকাশ করেছি। এতে কিছু ভুল ধরা পরেছে। সেটা আমার নিজ উদ্যোগে সংশোধন করে প্রকাশ করব’।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, বলেন, এই রাজাকারদের তালিকা বিএনপি ২০০৪ সালেও করে গিয়েছিল। বিএনপি যত হুংকার দিক, রাজাকারদের তালিকা তৈরি হবেই। সামনে ৬৪ জেলা ও সকল উপজেলা পর্যায়ে রাজাকারদের তালিকা করা হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ১৪ হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। আর স্বাধীনতার ৫০ তম বর্ষ উপলক্ষে আরও ১৫ হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এছাড়া, আগামী বছর থেকে হেলথ কার্ড দেওয়া হবে, এতে গরিব অসহায় মানুষ বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবে।