বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন আর নেই
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির বাগেরহাট
বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নানিল্লাহি ওা ইন্না ইলাইহি রাজিউন)বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রথম প্রহরে (সাড়ে ১২টায়) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে ও অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি.এ্যাডঃ আমিরুল আলম মিলন কেন্দ্রীয় সদস্য-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ,শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান হাবিবুর রহমান,মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শাহী আলম বাচ্চু ,মোড়েলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এ্যাডঃএস এম মনিরুল হক, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ,সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ শোক জানিয়েছেন।মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ সাইফুল ইসলাম কবির গত ৯ই ডিসেম্বর সর্বশেষ তিনি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৪০ সালের ১লা অক্টোবর মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কচুবুনিয়া গ্রামের বর্ধিষ্ণু পবিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হাজী রহমত আলী; মা ময়ফুল বিবি। তিনি একমাত্র পুত্রসন্তান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাহমুদ হোসেনসহ বহুগুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এমপি হিসেবে পাঁচবার জয়লাভ করেন ডা. মোজাম্মেল হোসেন। ১৯৫৮ সালে তিনি এসএসসি, ১৯৬১ সালে এইচএসসি, ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। সেখানে পড়াকালীন তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ডা. মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের একমাত্র ছেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, শুক্রবার হেলিকপ্টারযোগে তার মর দেহ নিয়ে বাগেরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা হবে মরহুমের স্বজনরা। জুমাআবাদ বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা সাড়ে তিনটায় মোরেলগঞ্জ সদরের এসি লাহা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ও সর্বশেষ আসর নামাজ বাদ তার নিজ গ্রাম এই উপজেলার কচুবুনিয়া গ্রামে হাজী রহমত আলী মাধ্যামিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ১৯৪০ সালের ১লা আগস্ট মোরেলগঞ্জের কচুবুনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।তিনি গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করেন। সরকারি পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। পরববর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জণ করেন।পরে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদেন। ১৯৭৯ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে তিনি বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। আমৃত্যু তিনি এই পদে সফলতার সাথে নিরবিচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই পদে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি একাধিকবার হামলার শিকারও হয়েছেন।
১৯৯১ সালে তিনি বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট) আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ডা. মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। পরবর্তীতে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসন থেকে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ডা. মোজাম্মেল হোসেন।
এদিকে তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শাহী আলম বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুতে রাজনীতিতে এক শূন্যতার সৃষ্টি হল। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তিনি দীর্ঘদিন দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে মোজাম্মেল হোসেন ছিলেন অগ্রভাগে।