মাথাপিছু ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ চান এমপিরা
আবারও মাথাপিছু ২০ কোটি টাকা করে থোক বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা (এমপি)। দশ বছরে তৃতীয়বারের মতো চাওয়া এডিপি বহির্ভূত বরাদ্দ প্রস্তাবনায় দেখানো হয়েছে অস্বাভাবিক ব্যয়। এরপরও দাবি মেটাতে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা দেয়ার সিদ্ধান্তও এক প্রকার চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
বিশেষ এ উদ্যোগে সংবিধান কিংবা আদালতের নির্দেশ কিছুই মানা হচ্ছে না দাবি করে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এমপিদের এ উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা। যদিও মন্ত্রী বলছেন, সংসদ সদস্যদের সরাসরি অর্থ ব্যয়ের সুযোগ না থাকায় অনিয়ম হবে না প্রকল্পে।
দেশ পরিচালনায় যুগোপযোগী নানা বিধিমালা তৈরিতে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবেই কাজ করার কথা সংসদ সদস্যদের। অন্যদিকে এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিচালক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো।
অথচ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের নামে শেষ দশ বছরে তৃতীয়বারের মতো ২৮০ জন সংসদ সদস্যকে ৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা দিতে যাচ্ছে সরকার। এরমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রাক মূল্যায়ন সভাও, চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য শিগগিরই প্রকল্পটি উঠবে একনেকে।
পিইসি সভার কার্যপত্র বলছে, প্রকল্প ব্যয়ের তালিকায় একটি ডেস্কটপের দাম ধরা হয়েছে এক লাখ টাকা, এক কোটি টাকা ধরা হয়েছে প্রতিটি জিপ গাড়ির দাম। ১২৮টি ছোট আকারের রোড রোলারের দাম ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে সংবিধান লঙ্ঘন হবে দাবি করে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংসদ সদস্যদের আর্থিক সুবিধা দেয়ার এ রীতি ক্ষমতা কাঠামোয় সঙ্কট সৃষ্টি করবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদ বিকাশের সুযোগ এটি। এই চর্চাটা আরো বাড়ছে।
যদিও অস্বাভাবিক ব্যয় পুনর্মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলছেন, বরাদ্দ করা অর্থ সরাসরি এমপিদের হাতে যাবে না। এতে ব্যয়ের ক্ষেত্রেও বজায় থাকবে স্বচ্ছতা।
মন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের দেয়া হয় কারণ তারা সে এলাকার প্রতিনিধি। এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। টাকা তাদের হাতেও যায় না।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মধ্যে থাকা ২০টি আসনের সংসদ সদস্য এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্যরা বিশেষ এ আর্থিক সুবিধার বাইরে থাকবেন।