পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের পাশে ইমরান
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সহিংসতার আগুনে পুড়ছে ভারতের রাজধানী নয়দিল্লি। গত কয়েকদিন ধরে চলা বিক্ষোভে উগ্রবাদীদের হামলায় প্রায় ৩৯ জনের নিহতের খবর জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। বেছে বেছে মুসলিমদের ওপরই হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি ও আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে এই সহিংসতা থামাতে বিজেপি সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এমনকি অনেক বিজেপি নেতা এতে বরং উস্কানিও দিয়েছে।
এমন অবস্থায় পাকিস্তানে কোন সংখ্যালঘু বা তাদের উপাসনালয়ে হামলা হলেই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক টুইট বার্তায় ইমরান খান বলেন, ‘আমি আমাদের নাগরিকদের সতর্ক করে দিতে চাই যে, আমাদের সংখ্যালঘু নাগরিক বা তাদের উপাসনালয়ের উপর যে কোন হামলাচেষ্টাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। আমাদের সংখ্যালঘুরা অন্যদের মতোই সমান অধিকার নিয়ে এখানে বসবাস করে।’
গত রোববার নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে-বিপক্ষে সংঘর্ষ থেকে এ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এরপর মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরকালেই ওই সহিংসতার জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় দিল্লি। বিক্ষোভে উগ্রবাদীদের হামলায় প্রায় ৩৯ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
তিন দিনের দাঙ্গায় দিল্লিতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০০। তাদের মধ্যে গুলিতে আহতের সংখ্যা ৪৬। বুধবার রাতেও উত্তর–পূর্ব দিল্লির ভজনপুরা–জোহরাপুরী এলাকা থেকে গোলমালের খবর পাওয়া যায়। তবে মারাত্মক কিছু ঘটেনি। তিন দিন নিষ্ক্রিয় থাকা পুলিশ বৃহস্পতিবার কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে। এলাকায় এলাকায় শান্তি কমিটিও সক্রিয়।
এদিকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুলিশ ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে মঙ্গলবারই স্পেশাল পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এসএন শ্রীবাস্তবও যোগ দেন। তবে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এখন তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে।
এদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (সিএএ) কেন্দ্র করে ভারতের দিল্লিতে চলমান সংঘর্ষে মুসলিমদের লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)।
ইউএসসিআইআরএফের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর শেষ হতেই প্রাণঘাতী দাঙ্গায় সহিংস হয়ে উঠেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি। মুসলিমদের লক্ষ্য করে উন্মত্ত জনতা হামলা চালাচ্ছে বলে জানতে পেরেছি আমরা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা জানতে পেরেছি দাঙ্গায় বেশ কিছু মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বহু মুসলিম। গতবছর ডিসেম্বর থেকে দেশজুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন চলাকালে এ অশান্তির শুরু হয়েছে।
এর আগে, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়েও মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলে ইউএসসিআইআরএফ।