একটি শ্রমিক বান্ধব প্রতিষ্ঠানের গল্প
এম.এ হায়দার সরকার, টঙ্গী
টঙ্গীর বিসিক এলাকার একটি স্বনাম ধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান টাম্পাকো ফয়েলস লিঃ। এক নামে চিনে পুরো টঙ্গী শিল্প এলাকা তথা পুরো গাজীপুর জেলায়। এই প্রতিষ্ঠানটির সুনাম রয়েছে দেশব্যাপী। ১৯৭৮ সালে টঙ্গীর বিসিক এলাকায় পৌণে চার বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত হয় এই প্রতিষ্ঠানটি।
মহামারি সংক্রামকব্যাধি করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট লকডাউনের মধ্যেও টঙ্গী, গাজীপুরসহ আশপাশের শিল্প এলাকা গুলোতে শ্রমিকরা যখন বেতন ভাতার দাবিতে কারখানা ভাংচুর, মহাসড়ক অবরোধ করে। তখন টাম্পাকো ফয়েলস লিঃ এর কর্মরত কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের শতভাগ বেতন ভাতা ও পবিত্র ঈদ-উল ফিতরে নির্ধারিত বোনাস গত ১০ মে পরিশোধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের অগ্রিম বেতন বোনাস পেয়ে অত্যন্ত খুশি।
গাজীপুরে শত শত শিল্পকারখানা থাকলেও শ্রমিকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছে টঙ্গীর বিসিক এলাকার টাম্পাকো ফয়েলস্ লি:। টাম্পাকো কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুুযোগ সুবিধা করে দেয়ার ফলে শ্রমিকদের কারখানার বাইরে যেতে হয় না। এতে শ্রমিকরা অনেকটাই নিরাপদে রয়েছে জানান কারখানায় কর্মরত একাধিক শ্রমিক। কারখানার প্রতিটি শ্রমিক মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূূরত্ব বজায় রেখে তাদের প্রতিদিনের কার্যক্রম নির্বিগ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পর্যপ্ত পরিমাণ কোম্পানীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করায় কাজ করছে সাদছন্দে।
কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা জানায়, করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য মালিক পক্ষ আমাদের কারখানার ভিতরেই আবসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এতে আমরা অনেক নিরাপদে আছি। আমাদের বেতন ভাতাসহ ঈদ বোনাসের টাকা সময় হওয়ার আগেই কোম্পানী পরিশোধ করে দিয়েছেন। কারখানার মালিক পক্ষ সব সময় আমাদের খোঁজখবর রাখছেন নিয়মিত। প্রতিনিয়ত খবর নিচ্ছেন সবার সুস্থতাসহ অন্য কোন বিষয়ে সমস্যা আছে কি না।
টাম্পাকো গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাফিউস সামি আলমগীর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংক্রামকব্যধি করোনা এখন সবচেয়ে বড় বাস্তবতা। এ বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। জীবন থেমে থাকবে না, ঠিক তেমনি আমাদের থেমে থাকলে চলবে না।
করোনার প্রভাব কাটাতে মানুষের জীবন জীবিকা এবং কৃষি শিল্পের উৎপাদনশীলতায় জোর দিতে হবে। আমি আশা করি আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগে ব্যবসা বাণিজ্য আবার স্বাভাবিক হবে ও অর্থনীতি ঘুরে দাড়াবে। আমাদের কারখানার উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল অনেকগুলো পরিবার। তাই শুরু থেকেই আমরা সরকারের সকল নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কারখানা চালাচ্ছি। করোনা মহামারি থেকে রেহাই পেতে শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া আমরা প্রতি মাসের বেতন নিয়মিত দিয়েছি এবং ঈদ বোনাস ঈদের দুই সপ্তাহ আগেই অগ্রিম দিয়ে দিয়েছি। এ সময়ে শ্রমিকদের কথা চিন্তা করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, টাম্পাকো এখন করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাসহ শ্রমিকদের কথা চিন্তা স্বাস্থ সুরক্ষা রক্ষার জন্য সব ব্যবস্থাই করেছি। করে নির্ধারিত সময়ের আগেই বেতনভাতা ও ঈদ সামগ্রী নিশ্চিত করে কারখানা চালু রেখেছি। ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট বিপদকালীন সময়ে শ্রমিকদের ঈদ বোনাসের টাকা পরিশোদ করে দিয়েছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রধান চালিকা শক্তি এই মেহনতি শ্রমিকরা। তাই শ্রমিকদের খুশি রেখেই আমার কারখানা পরিচালনা করতে চাই। এছাড়া কারখানার শ্রমিকদেরকে সরকারি নির্দেশনা মেনে পরিবারের সকলকে নিয়ে পরিষ্কার পরিছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছি।