সীমান্তে পাকিস্তানের সেনা সমাবেশ, হুঁশিয়ারি ভারতের
গালওয়ান উপত্যকায় চীন-ভারত সংঘাতের পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে কাশ্মীরে। গালওয়ানের লাদাখে ২৩ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত কোনো প্রতিশোধ নিতে না পারায় কাশ্মীরে সেই ক্ষোভ ছাড়তে পারে বলে শঙ্কা পাকিস্তানের। এর মধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা সমাবেশ করছে পাকিস্তান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা রোববার (২৮ জুন) এ খবর প্রকাশ করেছে। খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান কোনো অভিযানে নামলে উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
ভারতের ১৫ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি রাজু বলেছেন, ‘লাদাখ পরিস্থিতির কোনো প্রভাব এখনও কাশ্মীরে পড়েনি। ১৪ নম্বর কোর সেখানকার পরিস্থিতি সামলাচ্ছে। অতিরিক্ত বাহিনী কাশ্মীর হয়ে লাদাখ গেছে। কারণ সেটাই লাদাখ যাওয়ার স্বাভাবিক পথ। তবে পাকিস্তানও সেনা সমাবেশ করছে।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সম্প্রতি জানিয়েছিল তারা ভারতের পক্ষ থেকে আক্রমণের আশঙ্কা করছে। হয়তো তারা নিজেদের সুরক্ষার জন্যই সেনা সমাবেশ করেছে। তবে আমরাও সতর্ক আছি।’
জম্মু-কাশ্মীরে সংযুক্ত কমান্ডের বৈঠকে সেনার পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এলাকায় দ্রুত বাঙ্কার তৈরির ওপরে জোর দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৫ নম্বর কোরের কমান্ডার।
এর আগে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গেল এক সপ্তাহে অন্তত ১০ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সংঘাতের আশঙ্কায় বড়সড় প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
দেশটির সেনা প্রধান জেনারেল কমর জাভেদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাঠে একটি চিঠি পাঠিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য হাসপাতালে ৫০ শতাংশ বেড সংরক্ষিত রাখার অনুরোধ করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমধ্যম জি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, চিঠিতে বাজওয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা মুহাম্মদ নাজিব নাকি খানকে লিখেছেন, ‘আজাদ কাশ্মীরের সব হাসপাতালে পাক সেনাদের জন্য ৫০ শতাংশ বেড সংরক্ষিত রাখুন। রক্তের ব্যবস্থা করুন। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে তার প্রয়োজন হতে পারে।’এদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গোয়েন্দা রিপোর্টের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, কাশ্মীরে এখনো আত্মগোপন করে আছে বেশ কিছু অস্ত্রধারী। সেই সাথে যুবসমাজকে নিজেদের দলে টানতে চাইছে পাক মদদপুস্ট জঙ্গিগোষ্ঠী।
এর জের ধরেই ২০০ যুবকের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের সবার পাকিস্তানের ভিসা রয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, একাধিকবার পরিকল্পনা ব্যর্থ হলেও যুবসমাজকে বাগে আনতে মরিয়া হয়ে লেগেছে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো। সে প্রেক্ষিতে ২০০ জনের নিখোঁজ হওয়া নতুন আশঙ্কার বার্তা তৈরি করেছে।গোয়েন্দাদের দাবি নিখোঁজ হয়ে যাওয়া যুবকদের ব্যবহার করে জম্মু কাশ্মীরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ জোরদার করতে জঙ্গিরা। ঘটনার জের ধরে এরই মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে।