আবাসিক গ্রাহকদের বকেয়া বিল পরিশোধের সুযোগ ৩১শে জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত
জ্বালানী খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বা বিইআরসি আবাসিক গ্রাহকদের বকেয়া বিল পরিশোধের সুযোগ ৩১শে জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে।
কমিশনের এক আদেশে বলা হয়েছে, “শুধুমাত্র আবাসিক গ্রাহক শ্রেণীর ক্ষেত্রে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের বিদ্যুৎ বিল ৩১শে জুলাই ২০২০-এর মধ্যে পরিশোধে বিলম্ব পরিশোধ মাশুল প্রযোজ্য হবে না”।
এর আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিলের ক্ষেত্রে জুনের মধ্যে কোনো মাশুল ছাড়া জমা দেয়ার সুযোগ দিয়েছিলো।
এখন কমিশন বলছে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের বিল কিছু গ্রাহক মাশুল ছাড়াই দেরীতে পরিশোধ করলেও অনেক গ্রাহকই বিল পরিশোধ করতে পারেননি।
এ কারণেই ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের বিল মাশুল ছাড়া ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে দেয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বিলম্ব মাশুল মওকুফ করা হলো। বিকেলেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আদেশ জারি করেছি। দ্রুত প্রেস রিলিজ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিলম্ব মাশুল মওকুফ করেছিলাম। এরপর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে তা বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়। অর্থাৎ মে মাসের বিল জরিমানা ছাড়া দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবার জুন মাসের বিলের ক্ষেত্রেও এই ছাড় দেওয়া হবে। সে হিসেবে গ্রাহক ৩১ জুলাই পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া বিল দিতে পারবেন।
এর আগে গত ৮ জুলাই এই বিলম্ব মাশুল মওকুফের জন্য কমিশনের কাছে চিঠি দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ।
চিঠিতে বলা হয়, অতিরিক্ত বিলের ভোগান্তির কারণে অনেকেই জুনের মধ্যে তাদের সব বিল পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে গ্রাহকদের জন্য ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল মওকুফের জন্য বিইআরসিকে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সে সময় কমিশন জানায়, লাইসেন্সকারী বিতরণ কোম্পানিগুলো আবেদন করলেই তারা মওকুফ করার আদেশ দেবেন। এরপর বিতরণ কোম্পানিগুলোও আবেদন করে একে একে। তাদের আবেদনের ওপর ভিত্তি করে আজ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানান, আমরাও অনেক অভিযোগ পাচ্ছি। বিতরণ কোম্পানিগুলোকে দ্রুত অতিরিক্ত বিল যাদের এসেছে তাদের বিল ঠিক করে দিতে বলা হয়েছে। এ কারণে অনেক গ্রাহক এখনও সব বিল দিতে পারেননি। তাদের কথা বিবেচনা করে এই সময় বাড়ানো। ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছাড় পাবেন। যদিও ৩১ জুলাই শুক্রবার। সে হিসেবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকে বিল বিলম্ব মাশুল ছাড়া জমা দিতে পারবেন। এরপর কেউ চাইলে পরদিন অনলাইনে বিকাশ বা অন্য অন্য মাধ্যমেও বিল পরিশোধের সুযোগ পাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আইরিন পারভিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল প্রয়োজন হবে না। গ্রাহক মে মাসে বিলম্ব মাশুল ছাড়াই বিল পরিশোধ করতে পারবেন। তবে বিতরণ কোম্পানির ভুতুড়ে বিলের অভিযোগ ওঠায় মৌখিকভাবে বিলম্ব মাশুল ছাড়াই জুনের মধ্যে বিল পরিশোধ করার আদেশ দেওয়া হয়।