কোটচাঁদপুরের সরকারী কলেজের সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এলাকাবাসির মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর কে,এম,এইচ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারের খাম-খেয়ালীপনার বিরুদ্ধে ও খেলার মাঠ ক্ষতিগ্রস্থ না করে নতুন ৬তলা বিল্ডিং-এর নির্দ্ধারিত স্থান পরিবর্তন করে কলেজের অন্য স্থানে নির্দ্ধারণের দাবীতে কলেজের ছাত্রছাত্রী অভিভাবক রাজনৈতিক মহলসহ সচেতন মানুষ এবার ফুঁসে উঠেছে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে।
কোটচাঁদপুর কলেজ বাসষ্ট্যান্ডের মহাসড়কে বুধবার সকাল ১০ থেকে ১২টা পর্যন্ত চলে এ মানব বন্ধন। এতে অংশ নেয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গত ৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ডাকা মানববন্ধন কর্মসূচি অধ্যক্ষ পুলিশ দিয়ে রুখে দেন। ওই দিন সকালে পুলিশ নিয়ে আসেন কলেজ ক্যাম্পাসে।
এবার আর মানব বন্ধন কর্মসূচি বন্ধ করতে পারেননি। মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকি, পৌর মেয়র জাহিদুল ইসলাম, শিক্ষক মহিদুল ইসলাম লাল, কাজী জনি, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহিন, ক্রিড়া সংগঠক রায়হান চৌধুরী, অ্যাড. বিপ্লব, শান্ত রহমান, মিল্লাত হোসেন, অনিক শেখ, মারুফ হোসেন, আবদুল আজিজসহ স্থানীয় নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
করোনা সময়ের আগে কোটচাঁদপুর কেএমএইচ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারের বিরুদ্ধে খামখেয়ালীপনার অভিযোগে একাধিক পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিলো। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে না দেখায় অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী শাহাজাহান আলী। জানা গেছে গত ৪ অক্টোবর এ সরকারী কলেজের ৬তলা ভবন নির্মানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় এমপি অ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল।
এ অনুষ্ঠানটি অধ্যক্ষ নিজেই দায়িত্ব নিয়ে দায়সারা গোচের করেন। সেই সাথে তিনি কলেজের ৬ তলা বিল্ডিং-এর জায়গা নির্দ্ধারণের বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে এমন জায়গায় নির্দ্ধারণ করেন যা নিয়ে স্থানীয় এমপি, শিক্ষার্থী, অবিভাবক মহলসহ সচেতন মহল চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ক্ষোভ প্রকাশকারীরা মানব বন্ধনে বক্তব্যে বলেন- কলেজের এত জায়গা থাকতে এমন জায়গায় এই ৬ তলা বিল্ডিংটি স্থাপনের জায়গা নির্দ্ধারণ করা হয়েছে যা কলেজের সুন্দর খেলার মাঠটি চরম ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
তারা বলেন কলেজের পূর্ব পাশে যে জায়গা রয়েছে এ জায়গার এক পাশে এ ৬তলা বিল্ডিংটি স্থাপন হলে এবং পরবর্তীতে পাশাপাশি কলেজ হোস্টেল নির্মাণ হলে কলেজের সৌন্দর্য শতগুনে বৃদ্ধি পেত। অথচ অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমার কাউকে না জানিয়ে নিজ ইচ্ছায় কোটচাঁদপুরের ঐতিহ্য সবচেয়ে বড় ফুটবল খেলার মাঠটি নষ্ট করার পাঁয়তারা করছেন। এছাড়াও ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, কলেজের বিন্দু মাত্র নিরাপত্তা নাই। আগে যে সিসি ক্যামেরা ছিল সে গুলি এই অধ্যক্ষ কেন জানিনা খুলে রেখেছেন।
অনেকের ধারণা তিনি যোগদানের পর থেকে ঠিক মত কলেজে আসেন না। সিসি ক্যামেরা থাকলে বা তদন্ত হলে তিনি নিজেই ধরা পড়বেন যে কারণে তিনি কৌশলে সিসি ক্যামেরা অকার্যকর করে রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে গত দেড় বছরে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হয়নি। তিনি এসেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের প্রজেক্টর খুলে রাখেন। বিষয়টি নিয়ে কালের কণ্ঠে ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে পরের দিন তিনি প্রজেক্টর লাগান। অথচ তারপরও ক্লাস হয়না বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান সরকারের ডিজিট্যাল যুগে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস করানোর কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তিনি তা মানেনা।
বিষয় গুলো নিয়ে অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন- কোটচাঁদপুরে এ বিল্ডিংটা হোক এটা আমি চাই। তবে যে জায়গায় এটা নির্দ্ধারণ করা হয়েছে সেটা পিডি স্যার করেছেন। আমি ফুটবল মাঠের সমস্যার কথা বলেছিলাম। কিন্তু পিডি স্যার বলেছেন এ স্থানে বিল্ডিংটা করা না হলে এ প্রকল্পের কাজ অন্য উপজেলাতে চলে যাবে। এখানে এ বিল্ডিং হবেনা। যে কারণে এ জায়গায় নির্দ্ধারন করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার বিষয়ে তিনি বলেন, মনিটর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্যামেরা বন্ধ রয়েছে।
আপনি যখন বলছেন আমাকে ১মাস সময় দিন আমি সমস্ত কলেজ ক্যাম্পাজ সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসবো। এব্যাপারে স্থানীয় এমপি অ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, এর আগে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি পত্রিকায় রিপোর্ট দেখে তাকে আমি শুধরে নিতে বলে ছিলাম। তিনি শুধরাননি বরং খামখেয়ালীপনার মাত্রা বেড়ে গেছে অনেকাংশে অধ্যক্ষ সাহেবের। তার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে প্রচুর অভিযোগ আমি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রালয়ে কথা বলবো।