যুক্তরাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা!
শ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে অর্থনৈতিক ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। এ দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রুপ নিতে পারে যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত করোনা রিলিফ প্যাকেজের অনুমোদন না দেন।
দেশটিতে লাখ লাখ নাগরিকের খাবার কেনারও সামর্থ্য থাকবে না বলে জানিয়েছে সিএনএন ও ওয়াশিংটনপোস্ট।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) ৯০ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজে সই করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। ধারণা করা হচ্ছে, যদি তা না হয় তবে বহু নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারকে ভাড়া বাড়ি ছেড়ে পথে নামতে হবে। বন্ধ হবে সরকারি হাসপাতাল, অচল হবে চিকিৎসা ব্যবস্থা।
যদিও প্যাকেজটি মার্কিং কংগ্রেসে পাস হয়েছে। এদিকে, সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে সই না করার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে, দেশটির লাখ লাখ বেকার অপেক্ষার প্রহর গুনছেন সপ্তাহে ৬০০ ডলার করে কয়েক মাস ঘোষণা করা প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ সহায়তা পেতে। আর কোনো কারণে যদি প্যাকেজে স্বাক্ষর না করা হয় তাহলে বিপাকেই পড়তে হবে লাখ লাখ বেকার মার্কিন নাগরিকদের।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্র করোনায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে। দেশটিতে বর্তমানে ১ কোটি ২০ লাখ লোক বেকার হয়ে পড়েছেন। ঘরে খাবার নেই, সঞ্চয়ের অর্থও শেষ হয়ে এসেছে মার্কিনিদের।
ঘরে খাবার না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ লাইন দিচ্ছেন ফুড ব্যাংকে। দেশটির বিভিন্ন শহরে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে চলতি বছরের এপ্রিল-মে থেকে।
এহেন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতীক্ষিত করোনা রিলিফ বিলটি ২১ ডিসেম্বর পাস হয় মার্কিন কংগ্রেসের উভয়কক্ষে। এর আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলে আলোচনা-বিতর্ক। ঐদিনেই পাস হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারের সরকারি ব্যয় তহবিল।
প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি সপ্তাহে ৬০০ ডলার, বেকার ভাতা সপ্তাহে ৩০০ ডলার দেওয়ার কথা রয়েছে। একইসঙ্গে, ২৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পে চেক প্রোটেকশন প্রোগ্রাম ঋণ বাবদ, ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বাড়ি ভাড়ায় সহায়তা বাবদ ও ৮ হাজার ২০০ কোটি ডলার স্কুল কলেজ বাবদ রাখা হয়েছে। সেই প্যাকেজে সই না করার পক্ষেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নাগরিকদের ৬০০ ডলারের পরিবর্তে ২ হাজার ডলার করে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের জন্য ৬০০ ডলার সহায়তাও কম নয়।
এদিকে, তহবিল শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছে মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিডিসি। প্রণোদনার অর্থ পাবে এই প্রতিষ্ঠানটিও। এই মুহূর্তে অর্থ ছাড়া না হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অসংখ্য সরকারি হাসপাতাল। আর বীমা না থাকায় আক্রান্ত হয়েও চিকিৎসা বঞ্চিত হবেন দেশটির অনেক মানুষ। যার কারণে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুহার বেড়ে যাবে মার্কিন মুলুকে।