ভাসানচর যেতে স্বেচ্ছায় তালিকাভুক্ত হচ্ছেন রোহিঙ্গারা
ক্যাম্পের ঝুঁকিপূর্ণ পলিথিনের ঝুপড়িঘর ছেড়ে স্বেচ্ছায় আধুনিক স্থাপনা ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গারা। প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ জন যাওয়ার পর এক মাস না পেরোতেই স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে নাম তালিকাভুক্ত করছে তারা।
সমাজকল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা বলেন, ভাসানচরে যারা গেছেন, তাদের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধার কথা শুনে তারা (রোহিঙ্গা) নিজে থেকে নামগুলো লিস্টে তুলছেন।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ঘিঞ্জি ক্যাম্পে লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাস। চাপ কমাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। সেখানে নির্মাণ করা হয় আধুনিক স্থাপনা। রয়েছে খাদ্যগুদাম, সাইক্লোন শেল্টার, মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, খেলার মাঠ, বাজার, কবরস্থানসহ নানা সুযোগ-সুবিধা।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরের স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা। তাদের দাবি- কক্সবাজারের ওপর চাপ কমাতে দ্রুত আরও রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হোক।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কক্সবাজার থেকে যদি এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাহলে এ অঞ্চল থেকে কিছুটা চাপ কমবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের পাশাপাশি দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখা জরুরি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বর্তমানে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সেবায় ২২টি বেসরকারি সংগঠন কাজ শুরু করলেও পরে যুক্ত হয়েছে আরো সাতটি সংস্থা।
গত ২০১৭ সালের অগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। একই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।
কিন্তু ২০১৮ সালে যখন প্রথম তাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়, তখন থেকেই সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছিল রোহিঙ্গারা।