পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ করার দাবি
পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর নাম শেখ হাসিনা সেতু করার দাবি জানিয়েছেন সরকার দলের সংসদ সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এ দাবি জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পদ্মাসেতুর নামকরণের প্রস্তাব করেন গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মাসেতু উদ্বোদনের দিন আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়েছি।
সেদিন এই সেতুর প্রতিটা বালু কনা বলেছে আমি শুধু সেতু নই। আমি প্রতিবাদের প্রতীক, আমি ষড়যস্ত্রের বিরুদ্ধে ঘুরে দাড়ানোর শক্তি।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়চেতা সিদ্ধান্তের কারণে পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। তাই এই সেতুর নাম শেখ হাসিনা সেতু করতে হবে।
ইতোমধ্যে তিনি এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। কিন্তু আমাদেরও কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা নেত্রীর উপর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য কাজটি করতে চাই। ৩৫০ জন সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে অনুরোধ, এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হোক।
এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ বলেন, দুনিয়ার সবচেয়ে খরস্রোতা নদী পদ্মাকে শাসন করে বঙ্গবন্ধু কন্যার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে এই সেতু নির্মাণ করা। আমি আবারও দাবি জানাই এই সেতুর নাম হবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিনয় দিয়ে হয়তো বারবার বলবেন, ‘না’। কিন্তু আমরা এই প্রজন্মের যারা, তারা অকৃতজ্ঞ নই।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী সাংসদ বীরেন শিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিলো এই দেশের জন্য, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। স্বাধীনতার পর তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যেই পোড়া মাটির এই দেশে সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে এসেছিলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ ঈর্ষনীয় সাফল্যের জায়গায় পৌছেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার কারণেই এই সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। করোনাকালেও পাশ্ববর্তী কোন দেশই বাংলাদেশের কাছাকাছি অর্থনৈতিক সাফল্যের জায়গায় নেই।
করোনা মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে জনগণ তার সুফল পাচ্ছে। কিন্তু এখনো বাকি আছে। ভ্যাকসিন আসছে।
সেটার যথাযথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন গবেষণার বিষয়। এতো দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি কিভাবে সম্ভব হলো। তবে দেশে বেশকিছু ঝুঁকি আছে। বঙ্গবন্ধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকেও সেই কঠোর অবস্থা নিতে হবে।
বিকল্পধারার মহাসচিব সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের কারণে বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশ একটি উদাহরণ। করোনা মোকাবেলায়ও তিনি নজরকাড়া সাফল্য দেখিয়েছেন। দেশ সমৃদ্ধির পথে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। নিজের নির্বাচনী এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে সরকারের সফল বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে দ্বিতীয় ফেজের কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণে এই সরকারের আমলে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি করার কথা বলা হয়েছে। বাকী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভূক্ত করা হবে কিনা সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই।
পুরাতন ও জরাজীর্ণ রেলওয়ে জংশনগুলো সংস্কারের কথা বলা হয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বগুড়ায় বিমানবন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণ করেছিলো। সেটা বাস্তবায়নের পাশাপাশি মসজিদের ইমামদের ভাতা বাড়ানো ও বিদ্যুত্ বিল মওকুফের দাবি জানান তিনি।
সরকারের সাফল্য তুলে ধরে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য খালেদা খানম বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের সফলতা উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতির ভাষণে। এই সরকারের আমলে সব থেকে বড় প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। যা দেশকে এগিয়ে নিবে। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
করোনাকালে বিএনপি’র নীরবতার সমালোচনা : সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী বলেন, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জনগণের সেবায় যখন ব্যস্ত, তখন বিএনপি নেতা-কর্মীদের নীরবতা আমাকে ব্যাথিত করেছে।