জামিনের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে কারাগারেই ‘চিরমুক্তি’ লেখক মুশতাকের
জামিনের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে শেষ পর্যন্ত চিরমুক্তি নিয়ে নিলেন লেখক মুশতাক আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে মৃত্যু হয় তাঁর।
কারা সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকেলে মুশতাক আহমেদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্যবসায়ী মুশতাক অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন। গত মে মাসে লালমাটিয়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এরপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মুশতাক আহমেদকে কারাগারে তোলে। এর পর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন লেখক মুশতাক আহমেদসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক অন্যদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছিল। এসব সংগঠন বাংলাদেশে সম্প্রতি নির্বিচারে আটক বা লেখক-শিল্পীদের মত প্রকাশের অধিকার ব্যাহত হওয়ার মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানায়। এসব উদ্বেগ সত্ত্বেও মুশতাক আহমেদের মুক্তি মেলেনি।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও ‘রাষ্ট্রচিন্তার’ সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মুশতাক, কিশোর ও দিদারুলকে গত বছর মে মোসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ পেজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব তখন দাবি করেছিল, ওই পেজ থেকে রাষ্ট্রের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হচ্ছিল।
র্যাব আরো দাবি করে, হোয়াটস অ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে মুশতাক ও কিশোরের সঙ্গে তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের ‘ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ’ রয়েছে। দিদারুল ও মিনহাজ ফেসবুকে মুশতাকের ‘ফ্রেন্ড’ উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, ‘তাদের সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।’