স্ত্রী-শাশুড়ি ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতনে স্বামীর মৃত্যু
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে স্ত্রী, শাশুড়ি ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতনে আহত স্বামী সাইফুল ইসলাম মারা গেছেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। শুধু নির্যাতন নয় তাকে গাছে বেঁধে জোর পুর্বক কীটনাশক পান করিয়ে দেয় তারা। এমন অভিযোগ করেছেন নিহত সাইফুলের পরিবার। নিহত সাইফুল গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের ভাদু মন্ডলের ছেলে।
গত সোমবার (৮ মার্চ) রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সাইফুল স্ত্রী রোজিনার মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। সাইফুলের ধারালো ক্ষুরের আঘাতে রোজিনা জখম হয়। একই সময়ে রোজিনা ইট দিয়ে সাইফুলের মাথা ফাঁটিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার সকালে রোজিনার বাবা মা রোজিনাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালেও আহত সাইফুলকে চিকিৎসা না দিয়ে একটি গাছের সাথে বেধে রাখে। শুধু তাই নয়, মারধরের পাশাপাশি সাইফুলকে জোরপূর্বক কীটনাশক মুখে ঢেলে দেয়া হয়।
সাইফুলের পিতা ভাদু মণ্ডল জানান, সাইফুলকে গাছে বেঁধে মারধর ও মুখে কীটনাশক ঢেলে দেয়ার সংবাদ পেয়ে বামন্দী ক্যাম্প পুলিশের একটি টীম সাইফুলকে উদ্ধার করে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে গভীর রাতে সাইফুলের মৃত্যু ঘটে।
স্ত্রী রোজিনা জানান, স্বামী সাইফুল মাদকাসক্ত। সে মাদক সেবন করে প্রায়ই নির্যাতন করতো। সোমবার রাতে সাইফুল ক্ষুর দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করে। ক্ষুরের আঘাতে দু হাত জখম হয়। স্বামীর হাত থেকে রক্ষা পেতে রোজিনা ইট দিয়ে স্বামী সাইফুলের মাথা ফাটিয়ে দেয় বলেও স্বীকার করে। কীটনাশক পান করানোর ঘটনাটি মিথ্যা বলে দাবি করেন রোজিনা।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, পুলিশের একটি টীম সাইফুলকে আহত ও গাছে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাইফুল মারা গেছে বলে তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।