কেজিতে বাড়ল ১০ টাকা পেঁয়াজের দাম
চাল, ডাল, তেল, চিনির বাড়তি দামের সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে মুরগির দাম। এর সঙ্গে চলতি সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। এ নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ভোক্তাসাধারণ। বিক্রেতারা বলছেন, শীত মৌসুমের মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ শেষ। গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।
এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বাড়ছে। অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে লিটারে তিন টাকা পর্যন্ত। তবে টমেটো, গাজর, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম এখনো নাগালের মধ্যে রয়েছে। চলতি সপ্তাহে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
রাজধানীর মুগদা, মানিকনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। তবে কোথাও কোথাও ৪০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, যাঁদের আগের কেনা রয়েছে তাঁরা এ দামে বিক্রি করতে পারছেন। নতুন করে পাইকারি বাজার থেকে যাঁরা কিনে আনছেন, তাঁরা বেশি দামে বিক্রি করছেন। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। টিসিবির হিসাবে এক মাসে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।
মুগদা বাজারের বিক্রেতা মোতালেব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ আসতে আরো কিছুদিন লাগবে। শীতকালীন পেঁয়াজ বেশিদিন রাখা যায় না। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কম। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। আবার মাসখানেক পরে কমে যাবে।’
আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ২০-২৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। তবে আদা-রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি ও আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। রসুন ৬০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি।
বড় দানার মুসর ডাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি, ছোট দানার মসুর ডাল ১০০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। ছোলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। চিনি ৭০ টাকা কেজি। কোনো কোনো বাজারে সাদা চিনি ৬৫ টাকা কেজিতেও পাওয়া যাচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে আরেকটু। সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন তেল লিটারে এক টাকা বেড়ে ১২১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাম সুপারের দাম বেড়েছে লিটারে তিন টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। গরমে পাম লুজের চাহিদা বেড়েছে। তবে দাম লিটারে দুই টাকা কমে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরু চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়েছে। আগে যে মানের চাল ৬৫ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা।
অবশ্য বেশির ভাগ সবজির দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। বাজারে যথেষ্ট কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। আলুর দাম আগের মতোই ২০ টাকা কেজি, টমেটো ১৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু লেবুর দাম ভোগাচ্ছে ভোক্তাদের। ছোট আকারের লেবুর হালিও এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
মানিকনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গরমে মানুষের লেবুর শরবত খাওয়া বেড়েছে। আবার করোনা বাড়তে থাকায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে মানুষ বেশি বেশি লেবু কিনছে। বিপরীতে মৌসুম শেষ হওয়ায় লেবুর সরবরাহ অনেক কম। চাহিদা ও জোগানের ঘাটতিতে দাম বেড়েছে।’
বাজারে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বাড়লেও ডিমের দাম নাগালে আছে। ডিমের ডজন ৮২ থেকে ৮৫ টাকা। মানভেদে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা ডজন।
এদিকে বাজারে তেল ও ডালের দাম বেশি হওয়ায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এই দুটি পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৯০ টাকা এবং চলতি মাসের শুরুতে ডালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চিনি ৫০ টাকা কেজি আর পেঁয়াজ ২০ টাকা কেজি।