টঙ্গীতে সম্রাট হত্যা মামলা জট খুললো পিবিআই গ্রেফতার ৩
বি এ রায়হান, গাজীপুরঃ গাজীপুরের টঙ্গীতে বহুল আলোচিত সাইফুল ইসলাম সম্রাট হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই গাজীপুর। হত্যাকান্ডে জড়িত ৩ জন গ্রেফতার করেছে পিবিআই গাজীপুর। দীর্ঘ তদন্ত শেষে বুধবার ৮ সেপ্টেম্বর ও বৃহস্পতিবার ৯ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানার সাতগাঁও এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে আাসাদুজ্জামান মানিক(২৬), মাদরীপুর জেলা সদরের হাজরাপুর গ্রামের আফিল উদ্দিনের ছেলে নূর আলম ওরফে আলম(৩০), মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার বেশনাল গ্রামের সামসুদ্দোহা তালুকদারের ছেলে রনি(৩৩) তারা টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকায় বসবাস করতো।বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজীপুর পিবিআই। পিবিআই জানায়, গত ইং ০৫/০৮/২০১৬ তারিখ রাত অনুমানিক পৌনে ১০টার দিকে সাইফুল ইসলাম সম্রাট (২৫),এর মরদেহ টঙ্গী পূর্ব থানাধীন দত্তপাড়া আলম মার্কেটে গনেশ মাঠের পাশে আবুল হোসেনের চায়ের দোকানের সামনে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের মাতা সাহেরা বেগম বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ০৪/০৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে তৎকালীন টঙ্গী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি জেলা পুলিশ ও মেট্টোপলিটন পুলিশ ০২ বৎসর ০২ মাস মাস তদন্ত শেষে ০৭ জন এজাহারভুক্ত আসামী ও এজাহারবর্হিভূত ঘটনায় জড়িত ০৩ জন আসামীর পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় এবং মামলার ঘটনায় জড়িত মূল আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পরবর্তিতে আদলত গাজীপুর জেলা পিবিআইকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক মোঃ হাফিজুর রহমান পিপিএম মামলাটি তদন্ত করেন। ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধন ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগীতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান পিপিএম মামলাটি তদন্ত করেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী মোঃ মোফাজ্জল, আসিফ মিয়া, হুমায়ুন, কাইয়ুম সহ অন্যান্য আসামীরা ও ভিকটিম সাইফুল ইসলাম সম্রাট একই এলাকায় বসবাস করতো ও মাদক সেবন করতো। এদের মধ্যে আসামী মোফাজ্জল, আসিফ মিয়া, মোঃ মোফাজ্জলের বোন জামাই গেদা আনোয়ার মাদক বিক্রয় করতো। নিহত সম্রাট মাঝে মধ্যে মোঃ মোফাজ্জল, আসিফ মিয়া ও গেদা আনোয়ারের কাছ থেকে জোর পূর্বক মাদক বিক্রির টাকা নিত। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নিহত সম্রাট ঘটনার কয়েকমাস পূর্বে আসামী মোঃ মোফাজ্জল এর পায়ের রগ ও গেদা আনোয়ার এর হাতের কব্জি কেটে দেয়। এই ঘটনার জের ধরে আসামী মোঃ মোফাজ্জল গ্রেফতারকৃত আসামী আসাদুজ্জামান মানিকের দত্তপাড়া আলম মার্কেটস্থ বাসায় বসে পরিকল্পনা করে নিহত সম্রাটকে সুকৌশলে মদ খাওয়ার কথা বলে ডেকে আনে। পরে আসাদুজ্জামান মানিক সহ ঘটনায় জড়িত আসামীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে সম্রাটকে হত্যা করে। এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন আসামীরা প্রত্যেকেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। মূলত মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে পরিবার পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। পিবিআই প্রায় দেড় বৎসর তদন্ত করে মামলার মূল আসামী ও পরিকল্পনাকারী আসাদুজ্জামান মানিককে মৌলভী বাজার শ্রীমঙ্গল থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যা কান্ডে জড়িত আছে মর্মে স্বীকার করে এবং অন্যান্য আসামীদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। তার তথ্যের ভিত্তিতে মোঃ রনি ও নূর আলম ওরফে আলমকে টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার বাকি আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা প্রক্রিয়াধীন।