ছোট্ট এক গরুর সন্ধান পাওয়া গেছে গাজীপুরের গিনেস রেকর্ডে নাম উঠতে পারে টুনটুনির!
DESK NEWS 4TV ছোট্ট এক গরুর সন্ধান পাওয়া গেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াতখার চালা আড়ালিয়াভিটা গ্রামে। এবার টুনটুনি নামের খর্বাকৃতির এই বকনা বাছুরটি গিনেস রেকর্ডে নাম লেখাতে পারে- এমনটিই আশা ওই পরিবার আর এলাকাবাসীর। শ্রীপুর উপজেলার হায়াতখার চালা গ্রামের মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে কৃষক আবুল কাশেমের পালিত একটি গাভীর গর্ভে কাজলা সাদা রঙের খর্বাকৃতির এ বাছুরের জন্ম হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। বছর ঘুরলেও গরুটির ওজন ও উচ্চতা বাড়েনি। খর্বাকৃতির গরু টুনটুনির শারীরিক বর্ণনায়- এর গড় উচ্চতা ২০ থেকে ২২ ইঞ্চি। ওজন ২২ থেকে ২৩ কেজি। লম্বায় মাথা থেকে পেছনের পাশ পর্যন্ত ৩২ ইঞ্চি পাওয়া গেছে। মায়ের এপাশ কাটিয়ে ওপাশে টুনটুনির দুরন্তপনা চলে হরদম। মা আদর করতে চাইলে দৌড়ে দুরে সরে দুষ্টু টুনটুনি। মা মুখ নাড়তেই ফের মায়ের গা ঘেঁষে দাঁড়ায় সে। এমনি খুঁনসুটিতে সকাল গড়িয়ে বিকাল পর্যন্ত মায়ের চারপাশে ঘোরাফেরায় মত্ত থাকে এক বছর বয়সী বাছুর টুনটুনি। এখন সে পরিবারসহ গ্রামের বহু মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। পরিবারের দাবি এটিই হতে পারে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট গরু। যার ওজন ২১ থেকে ২২ কেজি হবে বলে জানান গরুর মালিক। টুনটুনি পাখির মতো দারুণ তিড়িংবিড়িং করে বলে সে বকনা বাছুরের নাম রাখা হয়েছে টুনটুনি। তাই টুনটুনি নামের খর্বাকৃতির এ বকনা গরুটিই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু এমনটি স্থানীয়রাও দাবি করেন। গরুর মালিক কৃষক আবুল কাশেম জানান, তার ছোট বড় সাতটি গরু রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি গাভি গরু রয়েছে আর চারটি ষাঁড়। গাভি তিনটির মধ্যে একটি গাভি বেশ বয়স্ক হয়ে পড়েছে। সে গাভিটি আটটি বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। গত বছর সে গাভিটি হিটে (গর্ভ ধারণের সময়) আসলে ষাঁড়ের মাধ্যমে বীজ দেওয়া হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে গাভিটি খুবই ছোট আকারের একটি বাচ্চা প্রসব করে। যা দেখতে খুবই ছোট হয়েছে। জন্মের সময় বাছুরের লিঙ্গ নির্ণয় করা যায়নি। কয়েক দিন পর সেটি একটি বকনা (মাদি) বাছুর তা চোখে পড়ে। কৃষকের স্ত্রী জরিনা বেগম জানান, আমরা কৃষক পরিবার। নিয়মিত আমরা গরু লালন পালন করি। সব সময় আমাদের গোয়ালে ৭-৮টি গরু থাকে। এ গাভিটির গর্ভে গত বছর অদ্ভুত এক বাছুর (বকনা) জন্ম নিয়েছে। বাছুর এতো ছোট ছিল যে গাভির ওলানে মুখ লাগাতে পারতো না। পরে কোনো উপায়ন্তর না দেখে তাড়াতাড়ি করে বোতলে দুধ ভরে বান দিয়ে খাওয়ানো হতো বাছুরকে। পরে কুলে তুলে উঁচু করে গাভির ওলানে ধরলে সে নিজে নিজেই দুধ খেতে পারতো। সকাল দুপুর রাত করে দুধ খাওয়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে এক বছর বয়স হলো বাছুরটির। কিন্তু গায়ে গতরে বড় হচ্ছে না। তিনি বলেন, এখন এ বাছুরকে সন্তানের মত আদর করি। অন্যরকম আনন্দ লাগে। গ্রামের মানুষ দেখতে আসে ছবি তুলে দেখতে ভালো লাগে। যদি এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হয় তাহলে আমাদের গর্ব আমাদের গ্রামের গর্ব দেশের গর্ব। শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রোকনুজ্জামান পলাশ জানান, এমন খবর আমাদের জানা নেই, শুনলাম। দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে দেখব। যদি সবচেয়ে ছোট গরু হয় এটি তাহলে আমরা যাচাই বাছাই করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডের স্বীকৃতির জন্য আবেদন করব। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এমনটি হলে দ্রুত লোক পাঠিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। গরুটি দেখতে যাব। এই বাছুরটি দেশি জাতের হলেও খর্বাকৃতিই (বামন) রয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি গড়া গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে সাভারের রানী ছোট গরুর স্বীকৃতির রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে টুনটুনি নামের এই গরুটি। এমনটাই আশা কৃষক ও এলাকাবাসীর। এর আগে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে স্বীকৃতি পায় সাভারের আশুলিয়ার শিকড় অ্যাগ্রোর বামন গরু ‘রানী’। তবে সেটা মৃত্যুর পর। গত ২৯ জুলাই রানীর নাম গিনেস বুকে ওঠে। দেশ ও বিদেশে আলোচিত সেই রানির উচ্চতার ২০ ইঞ্চি ও ওজন ছিল ২৬ কেজি। বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত সাভারের চারিগ্রামে শিকর অ্যাগ্রো ফার্মের রানী নামের ক্ষুদ্র গরুটি ১৯ আগস্ট দুপুরে সাভার উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে চিকিৎসাধীন থেকে মারা যায়। মৃত্যুর পর বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরুর স্বীকৃতি পেয়েছে রানী।