শ্রীপুরে ১৭ঘন্টা পর উদ্ধার হলো মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেন
বি এ রায়হান, গাজীপুরঃ গাজীপুরের শ্রীপুরের কাওরাইদ রেল স্টেশনে লাইনচ্যুত মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দুর্ঘটনার ১৭ঘন্টা পর দুটি বগি ও একটি ইঞ্জিন উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১জানুয়ারি) ভোর রাত ৫টা ৩০ মিনিটের সময় উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয় বলে জানিয়েছেন কাওরাইদ রেল স্টেশনের মাস্টার মোঃ আল আমিন মৃধা। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৫মিনিটের দিকে মহুয়া এক্সপ্রেস কাওরাইদ স্টেশনে প্রবেশের সময় স্টেশন ভবন এলাকায় দুই নাম্বার লাইনে লাইনচ্যুত হয়। এতে ট্রেনটির দুটি বগির চারটি চাকা ও ইঞ্জিনের দুটি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পর বিকেল ৪টা ১০মিনিটে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে ৬টা ৩৫মিনিটে প্রথম একটি বগি উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ৯টা ৩০মিনিটে অপর আরেকটি বগি উদ্ধার করা হয়। সবশেষ ভোর রাত ৫টা ৩০মিনিটের সময় ইঞ্জিন উদ্ধার করা হলে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করা হয়। রেল দুর্ঘটনা নিয়ে মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান ও স্টেশন কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনার সময় কাওরাইদ রেল স্টেশনে কর্তব্যরত ছিলেন স্টেশন মাস্টার আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, ঢাকা থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জগামী মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেলা ১১টা ১২মিনিটে শ্রীপুর স্টেশন ছাড়ে। ১১টা ৩৫মিনিটের সময় ট্রেনটি কাওরাইদ স্টেশন এলাকায় প্রবেশের আগেই ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। তিনি আরও জানান, কাওরাইদ রেললাইন স্টেশন এলাকায় রেল লাইন মেরামতে কাজ চালাচ্ছিল গ্যাং সদস্যরা (মেরামতকারী সদস্যরা)। মেরামতকারীরা ২নং লাইনের নিচে কাঠের ¯িøপার সরিয়ে ফেললে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ২নং লাইন মেরামতের বিষয়টি কাওরাইদ স্টেশন মাস্টারকে অবহিত করেননি মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে, অবহিত না করায় মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে স্টেশনর ২ নাম্বার লাইনে প্রবেশের অনুমতি দেয় স্টেশনে কর্তব্যরত মাস্টার। পরে ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশের সময় স্টেশন ভবন এলাকায় একটি ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। এতে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছে। রেল স্টেশনের এক নাম্বার লাইনে যানচলাচল স্বাভাবিক আছে। দুর্ঘটনার কিছু সময় ময়মনসিংহগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস মহুয়া এক্সপ্রেসের সকল যাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ায যাত্রী দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান। অভিযোগ অস্বীকার করে রেলওয়ের পিডবিøউ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, স্টেশন মাস্টারকে জানিয়েই সকাল থেকে ওই লাইনে মেরামত চলছিল। স্টেশন মাষ্টারের ভুল সিগন্যালের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান। তবে স্টেশন মাস্টার আমিনুল ইসলাম বলেছেন, আমাকে না জানিয়েই তারা লাইন মেরামতের কাজ করছিল। এছাড়াও কোন ট্রেন স্টেশনের প্রবেশের আগে একাধিকবার মাইকিং করে যাত্রীদের জানিয়ে দেয়া হয়, ট্রেনটি কত নাম্বার লাইনে থামবে। এখানেও মাইকিং করা হয়েছিল, কিন্তু মেরামতকারীরা মাইকিং শুনেও দুই নাম্বারে লাইনে ট্রেন প্রবেশে নিষেধ করেননি।