বিশ্ব পানি দিবসেও টঙ্গীতে সুপেয় পানির সংকট
বি এ রায়হান, টঙ্গী গাজীপুরঃ ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবসেও পানি সংকটে ভুগছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অঞ্চলের জনগন। দীর্ঘদিন যাবৎ সেই পানি সংকট থাকলেও টনক নড়ছে না নগর কতৃপক্ষের। অফিস কিংবা বাসা সব জায়গায় পানির সংকট দিন দিন তীব্র আকার ধারন করছে। এতে বিপর্যস্ত জনজীবন নাকাল সাধারন মানুষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, টঙ্গীর প্রতিটি ওয়ার্ডে সুপের পানি সংকট দেখা দিয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে এ সমস্যায় ভুগছে এলাকার বসবাসকারী সাধারণ মানুষ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেশীর ভাগ এলাকায় পানি সংকট থাকায় এই দীর্ঘ সময় এলাকাবাসিকে অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন পানি আসবে আর কখন তারা তা সংগ্রহ করবে। সাবমারসিবল পাম্প বসানো বাড়ির মালিকদের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নচিত্র দেখা যায়। সিটি কর্পোরেশনের পাম্প বিকল, অপারেটর সংকট, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, ত্রুটিপূর্ণ লাইনসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জড়িত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। দিনদিন জনভোগান্তি চরম আকার ধারন করলেও অভিযোগ রয়েছে এ বিষয়ে দৃষ্টি নেই নগর কর্তৃপক্ষ কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। টঙ্গীর ১৫টি ওয়ার্ডের বেশীরভাগ স্থানের এই দূর্ভোগ দীর্ঘদিনের হলেও সম্প্রতি একাধিক ওয়ার্ডে পানির সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। তার মধ্যে অন্যতম নগরী ৪৭ নং ও ৫৬ নং ওয়ার্ড। এনিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব প্রতিবাদ হলেও তেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আরিচপুর এলাকার একাধিক বাড়ির মালিক অভিযোগ করে বলেন, পানি সংকটের কারনে ভাড়াটিয়ারা বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। অনেক সময় ছেলে মেয়েদেরও স্কুল-কলেজের কাজ বন্ধ করে গোসল ও রান্নার পানি সংগ্রহ করতে ব্যস্ত থাকতে হয়। শিলমুন এলাকার বাসিন্দা আল আমিন হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা পানির সমস্যায় ভুগছি। মাসের বেশীরভাগ সময় ঠিকমত পানি না পেয়ে এলাকাবাসী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোড়ালো প্রতিবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে ৫-৬দিন পূর্বে পুরানো পাম্পটি দায়সাড়া ভাবে সংস্কার করে কোন রকমে সচল করলেও সেটা আবার বিকল হয়ে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাত কম হওয়া, অপরিকল্পিত নগরায়ন, নদী শুকিয়ে যাওয়াসহ নানাবিধ কারনে পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এছাড়া বর্তমান শহর ব্যবস্থায় পাইপ লাইনের লিকেজও পানি সংকটের অন্যতম একটি কারন। পানির অপচয় রোধ ও ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে। এসংক্রান্তে এখনি জরুরী পদক্ষেপ গ্রহন না করলে ভবিষ্যতে পানির সংকট আরো তীব্র হবে। এবিষয়ে একাধিক বার ৪৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাদেক আলীর সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে নির্বাহী প্রকৌশলী (পানি ও পয়:নিস্কাশন) মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে ২৮ টি পাম্প টেন্ডারের জন্য রেজুলেশন করা হয়েছে তার মধ্যে ৭টি টেন্ডার করা হয়েছে। বাকিগুলো খুব দ্রুত টেন্ডার করা হবে। কাজ শুরু হতে মাস খানেক সময় লাগবে।