জেলা প্রশাসকের গাড়ি চালককে মারধর, দুই কনস্টেবল প্রত্যাহার
গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর জেলা প্রশাসকের গাড়ি চালক হিরা মিয়াকে মারধরের ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল ইউসুফ আলী ও নুর মোহাম্মদ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খাইরুল আলম, সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) মোঃ মাকসুদুর রহমান। এর আগে রবিবার বেলা ১২টার দিকে শহরের রাণী বিলাসমনি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পরিবহন পুলের চালক ও কর্মচারিরা। প্রত্যক্ষদর্শী ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের স্টিকার যুক্ত গাড়িযোগে তার দুই শিশু মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন চালক মোঃ হিরা মিয়া। গাড়িটি শহরের রাণী বিলাসমনি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে এসে পৌঁছালে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ ওই গাড়িটি ঘুরিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে বলেন। এসময় চালক হিরা মিয়া ট্রাফিক পুলিশকে জানান গাড়িতে জেলা প্রশাসকের দুই মেয়ে রয়েছে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ট্রাফিকের এক পুলিশ সদস্য গাড়িতে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এতে চালক হিরা মিয়া প্রতিবাদ করলে লাঠি দিয়ে তাকেও আঘাত করে এবং তাকে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামাতে চায় দুই পুলিশ কনস্টেবল ইউসুফ ও নুর মোহাম্মদ। পরে চালক হিরা মিয়া গাড়ি ঘুরিয়ে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে চলে যান। এদিকে, জেলা প্রশাসনের পরিবহন পুলের গাড়ি চালককে পুলিশ কর্তৃক মারধরের ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সকল কর্মচারীরা বেলা ১২টার দিকে রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এসময় আধাঘন্টা ব্যাপী ওই সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা কর্মচারিদের বুঝিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভেতরে নিয়ে যায়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলা প্রশাসকের গাড়ির চালকের সাথে পুলিশ সদস্যদের আচরণগত ত্রুটির বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে প্রমান হয়েছে। এজন্য অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবিরের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।