মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে প্রান গেল ছেলের পরিবারের দাবী অবহেলায় মৃত্যু।
বি এ রায়হান, গাজীপুরঃ ষোল বছরের টগবগে কিশোর আফিফ ইশফাক আপন। বাবা মার আদরের সন্তান দুই ভাই বোনের মধ্যে বড় সে। লেখাপড়া করতো রাজধানীর স্বনামধন্য একটি স্কুলে। সঙ্গ দোষে কিছুটা বিপথগামী হওয়ায় কিশোর ছেলেকে সুস্থ করতে গাজীপুর সদরের আলোর জীবন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন বাবা আমিরুল ইসলাম। মধ্যরাতে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠালেও সকাল বেলা খবর পান তার ছেলে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনা শুনে বিশ্বাস না করলেও সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে হত বিহ্বল হয়ে পড়েন বাবা আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন আমার ছেলে আত্মহত্যা প্রবন ছিল না। সবসময় বিনোদনপ্রেমী ছিল। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, খেলাধুলা নিয়ে মেতে থাকতো সে। এমন ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে কেন এমন বড় গামছা থাকবে যাতে অন্যের ক্ষতিসাধন হয়? এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। তাছাড়া কয়েক মাস যাবৎ ওই প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা বিকল। অথচ নিয়ম হচ্ছে ২৪ ঘন্টা সকল রোগীকে নজরদারিতে রাখতে হয়। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে মানুষ চিকিৎসা সেবা ও পুনর্বাসনের জন্য আসে এখানেই যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? আজ আমার বুক খালি হয়েছে এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরো অনেক মা বাবার বুক খালি হয়ে যাবে। নিরাময় কেন্দ্র গুলোর এ ধরনের অবহেলা বন্ধে সরকারি সংস্থাগুলোর নজরদারির দাবি জানাচ্ছি। গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে গাজীপুর সদরের বড় হাজীবাগ এলাকার আলোর জীবন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে এঘটনা ঘটে। নিহত আফিফ ইশফাক আপন (১৭) গাজীপুরের কালিয়াকৈর পূর্ব মৌচাক এলাকার মো. আমিরুল ইসলামের সন্তান। তারা পরিবারসহ নগরীর ছায়াবিথী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে আলোর জীবন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক মো. সুমন কর্তব্যে অবহেলার কথা শিকার করে বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে নিহত আপন ক্লাস রুমের ফ্যান লাগানোর হুকের সাথে গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। যেহেতু আমার প্রতিষ্ঠানের ভিতরে এই ঘটনা ঘটেছে তাই এর দায় আমার উপরেও বর্তায়। তিনি আরো বলেন সিসি ক্যামেরা বিকল থাকায় আসল ঘটনা কি ঘটেছিল তা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাছাড়া দিনটি শুক্রবার হওয়ায় সবাই একটু দেরীতে ঘুম থেকে উঠে। গাজীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিহতের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসলে বিস্তারিত জানা যাবে। প্রাথমিক ভাবে থামায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। গাজীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, আলোর জীবন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ঘটনার বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। কিছু বিষয় ইতিমধ্যে সামনে এসেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।