সরকারী নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে চলছে স্কিম পাস গাংনীতেবিএডিসি সেচ পাম্প প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি
আল-আমীন সিনিয়র স্টাফ রিপোটারঃ মেহেরপুরের গাংনীতে অনিয়ম দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে সেচ পাম্প প্রকল্প স্থাপনের কাজ। বাংলাদেশ সরকারের সেচ পাম্প প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী একটি গভির নলকুপ থেকে অন্যটির দূরত্ব ৮০০ ফিট হতে হবে। তা নাহলে সেচ পাম্পের অনুমোদন দেয়া হবেনা। অথচ সেখানে গাংনী বিএডিসি (সেচ) অফিসের মেকানিক নজরুল ইসলাম ও অফিসের কর্তা ব্যক্তিদের যোগসাজশে সরকারের এ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ১৫০ থেকে ২০০ ফিটের মধ্যে স্কিম পাশের অনুমতি দিচ্ছেন। যার ফলে সেচ পাম্প মালিকদের পাশাপশি কৃষকরাও হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার। অপরদিকে সেচপাম্পগুলো নিকট বর্তী স্থানে বসানোর ফলে সেখানে যে কোন মুহুর্তে ভূমি ধ্বসের আশংকা দেখা দিয়াছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে লিটন আলী গত ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর বিএডিসি অফিসের মাধ্যমে দুটি সেচপাম্পের স্কিম অনুমতি পান। যেটা বর্তমানে চালু আছে। এর মধ্যে লিটনকে একাট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে কৃষকরা তাদের প্রয়োজনমতো সেচ দিতে পারছেন। লিটনের পাস হওয়া আরেকটি স্কিমকে বাদ দিয়ে সেখানে বিএডিসির মেকানিক নজরুল ইসলাম মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একই গ্রামের সাকের আলীর নামে আরেকটি স্কিম পাশ করে সংযোগ করে দিয়েছে। একই গ্রামের নাসির উদ্দীনের ছেলে ইয়ারুল ইসলাম ৫/৬ মাস আগে ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে সেচপাম্পের সংযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি প্রকাশ হয়ে গেলে সংযোগ আটকে দেয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস । পরবর্তীতে ইয়ারুল একই গ্রামের রহিম বক্সের ছেলে জাকের আলী ৩ মাস আগে সেচ পাম্পের জন্য আবেদন করে বিএডিসি অফিসে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের ক্ষমতার দাপটে ও বিএডিসি অফিসের মেকানিক নজরুল ইসলাম ও অফিসের কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীর সহযোগীতায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে লিটনের স্কিমের ১৫০-২০০ ফিটের মধ্যে দুটি সেচপাম্পের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যা বর্তমানে জাকের আলীর সেচপাম্পটি সংযোগ হয়েছে এবং ইয়ারুলের সেচপাম্পটি সংযোগের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে লিটন বলেন, আমার স্কিমের মধ্যে ওই দুটি পাম্প চালু হলে আমি অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হব এবং স্থানীয় কৃষকরা হবে ভোগান্তির শিকার। ইয়ারুলের পৃষ্ঠপোষক ছামু ও জাকের ফসলী জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে আমাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমি এ বিষয়ে বিএডিসি অফিসে লিখিত ভাবে অভিযোগ দখিল করলে তারা কোন রিসিভ কপি দেয়নি। পরে আমি বিষয়টি ইউএনও অফিসে জানিয়েছি। কিন্তু তাতেও কোন ফল পায়নি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যারা আইন প্রয়োগ করেন তারাই যদি আইন ভঙ্গ করে তাহলে আমাদের মত স্বল্প আয়ের মানুষেরা কি করতে পারে? এ বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
বিষয়টি দীর্ঘ সময় যাবৎ চলতে থাকলে যেকোন সময় আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার আশংকা করেছে স্থানীয় কৃষকরা। এই বিষয়ে বিএডিসি মেকানিক নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গাংনী বিএডিসি সেচপাম্প প্রকল্প কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে চাষীদেরকে সেচ পাম্প স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়।
গাংনী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম জানান, আমি কোন তদন্ত অফিসার না। আমার সাথে কথা বলে কোন লাভ হবে না।
গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান মুরাদ আলী জানান, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৮০০ ফুটের মধ্যে কোন ভাবে অন্য কোন সেচ পাম্পের সংযোগ দেওয়া যাবে না।