ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি হবেই: প্রধানমন্ত্রী
চার দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিস্তা চুক্তি হবেই। এটা নিয়ে এখনই হতাশার কিছু নেই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন সেটিকে কালক্ষেপণ বলে মনে করছেন তিনি। এ বিষয়ে হতাশ না হয়ে মোদির দেওয়া কথায় ভরসা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন: আমরা ডাউন স্ট্রিমে তাই তিস্তার পানি কেউ আটকে রাখতে পারবে না।প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, তিস্তায় (গজল ডোবায়) যখন বাধ করলো আমাদের যে সরকার ক্ষমতায় ছিলো তারা প্রতিবাদ তো দূরের কথা ‘টু’ শব্দ করলো না কেনো। উল্টো আমরা একটা ব্যারেজ করলাম। তখনকার সরকারকে বলতে শুনেছিলাম, ভারতকে শিক্ষা দিবেন!
মমতা যা বলেছেন তাতে তিস্তা চুক্তি একটি দীর্ঘসূত্রীতায় পড়ে যাবে। আমি তাকে উল্টো বলেছি, ঐ চারটি নদীর পানি তিস্তায় এনে আমাদের দেন।
তবে, মোদি বলেছে হাসিনা-মোদি ক্ষমতায় থাকতেই হবে তিস্তা চুক্তি হবে। আমরা অপেক্ষায় করতেই পারি। আমি এটাও বলে এসেছি, চেয়েছিলাম পানি পেলাম বিদ্যুৎ। দেখা যাক মমতা দিদি কতোটুকু বিদ্যুৎ দেন। আমরা কিনে নিবো।
এবারের ভারত সফর ফলপ্রসু বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেছেন: অতৃপ্তির কিছু নেই, তৃপ্তি নিয়েই ফিরেছি। ভারত একটি সার্বভৌমত্ব দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যতোটুকু প্রাপ্য ততোকুটু দিয়েছে। আমাদের পাশাপাশি প্রতিবেশীরা যদি উন্নয়ন না হয় তাহলে আমাদের উন্নয়ন দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আমি যে কানেকটিভিটি গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম, সেটা এ সফরে সম্ভব হয়েছে।
এই সফরের আগে অন্যতম আলোচিত ছিলো সামরিক চুক্তি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চুক্তি না হলেও সমোঝতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। ভারত থেকে পাওয়া মোট ঋণের মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের নমনীয় ঋণ পাওয়া যাবে সেনাবাহিনীর অস্ত্র কেনার জন্য। শুধু ভারত থেকেই নয় এই অর্থে যেকোনো দেশ থেকে অস্ত্র আনতে পারবে সেনাবাহিনী।
প্রটোকল ভেঙে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে চলে আসা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন:মোদি যে সেখানে আসবেন আমি জানতাম না। আমাকে যখন জানানো হলো, প্রধানমন্ত্রী অপেক্ষা করছেন-আমি বেশ অবাক হলাম। তিনি যখন আসলো আমি তাকে বলে ছিলাম ‘হোয়াট এ প্রেজেন্ট সারপ্রাইজ’! সফরে আমার সঙ্গে যারা গিয়ে ছিলো সকলের সঙ্গে তিনি ধৈয্য করে কথা বলেছেন। অনেকের সঙ্গে ছবি তুলেছেন। সেলফি তুলেছেন। তার এভাবে বিমান বন্দরে চলে আসায় জাতি হিসেবে আমরা সম্মানীত হয়েছি।
বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আগের যেকোনো সময়ের থেকে দৃঢ়। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত সকলের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন বন্ধুত্বের। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার কিভাবে এ কঠিন বিষয়টি সম্ভব করে চলেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: আমাদের সরকার বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে চলছে-‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’।প্রতিবেশি কিংবা কোনো কোনো দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সমস্যা থাকতে পারে। আমরা কেনো সেটা দেখবো! ভারসম্য যে রক্ষা করা যায় সেটা আমরা করে দেখিয়েছি।