সিলেটে জঙ্গি রিপনের ফাঁসি কার্যকর
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার রাত ১০টা এক মিনিটে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয় বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া।
এর আগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুটি মাইক্রোবাস ও একটি অটোরিকশা যোগে শেষ দেখা করতে কারাগারে প্রবেশ করেন রিপনের পরিবারের আনুমানিক ২৫ সদস্য। এদের মধ্যে বাবা আ. ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রয়েছেন বলে কারা সূত্র জানিয়েছে।
সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া জানান, পরিবারের সদস্যদের সাথে শেষ দেখা করার পর রিপনকে গোসল ও তওবা পরানো হয়। রিপনকে তওবা পড়ান নগরীর আবু তোরাব মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি মো. বেলাল উদ্দিন।
সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় এই ফাঁসি কার্যকর করা হলো। সে অনুযায়ী সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। বাড়ানো হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলরোড থেকে বন্দরবাজার পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া জানান, ফারুক আহমদের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি জল্লাদ প্যানেল রিপনের ফাঁসি করে।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি। এ ঘটনায় আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন। এই মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়ে হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান, সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসির দন্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই রায় আপীলেও বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এরপর প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাদের আবেদন খারিজ করে দেন।
লাশের মৃত্যু নিশ্চিত করে এখন আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে সময় লাগছে। এরপর লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে পরিবারের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।