চাঞ্চল্যকর গ্রাম পুলিশ ইদ্রিস আলী হত্যার ১৩ মাস পর প্রধান আসামী মেম্বারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, উপজেলার ৩নং ভাইটকান্দি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ মেম্বার (৫০) ও ছেলে মাহবুল আলম। বুধবার ( ১২ এপ্রিল ) বিকালে উপজেলার দেওলা গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) শেখ আহম্মদ আলী মোল্লা।
এদিকে মামলার বিবরন থেকে জানা যায়, গত ২০১৬ সালের (২২ মার্চ) অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভাইটকান্দি নারকেলী গ্রামের ইদ্রিস আলী নামের গ্রাম পুলিশকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মামলার বিবরন থেকে আরো জানা যায়, শুক্রবার (২৫ মার্চ) সকালে বাড়ির পাশে একটি জিগার গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ইদ্রিসের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে আশিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার ( ২৫ মার্চ ) ফুলপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত হত্যা মামলার আসামী সাবেক ইউপি সদস্য (১) আব্দুল মজিদ মেম্বার (৫০) ছেলে মাহবুল আলমকে প্রধান করে ২৭জন নামদারী আসামী ও অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১২জন আসামী রয়েছে।
এদিকে পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, নির্বাচনী বিরোধের জের ধরে ভাইটকান্দি ইউনিয়নের পরাজিত মেম্বার আব্দুল মজিদের লোকজনই ইদ্রিস আলীকে হত্যা করেছে। নিহত গ্রাম পুলিশের ছেলে আশিকুলের অভিযোগ, সাবেক মেম্বার মজিদকে নির্বাচনে সহায়তা না করায় তাঁর লোকজন তাঁর বাবাকে ডেকে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে।
তিনি আরো জানান, নির্বাচনের পরদিন তার বাবা ইদ্রিস আলী কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে ফুলপুর থানায় একটি তালিকা প্রদান করেন। এ ছাড়াও ২০১৬ সালের ( ২৪ মার্চ ) বিকেলে ফুলপুর থানার পুলিশকে ফোন করেও বিষয়টি অবগত করেন।
আশিকুল আরো জানান, অভিযোগ করার পর পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু ওই দিন বৃহস্পতিবার ( ২৪ মার্চ ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মজিদ ও তার সমর্থকরা ইদ্রিস আলীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে বাড়ির পাশেই একটি জিগার গাছে ঝুলিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ইদ্রিস আলীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এবিষয়ে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফুলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিদ্দিকুর রহমান জানান, গত ২০১৬ সালের (২২ মার্চ) অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে থানা সদরে ফেরার পথে পরাজিত মেম্বার মজিদ ও তার সমর্থকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশ পরাজিত মেম্বার মজিদসহ ৬০ থেকে ৭০ জনের নামে একটি মামলা করে।
এ জন্য মজিদ ও তার-সমর্থকরা গ্রাম পুলিশ ইদ্রিস আলীকে দায়ী করে ও তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মারতে চাইলে এলাকার লোকজনের বাধাঁর মুখে পড়ে মেম্বার ফিরে যায়। পরে বৃহস্পতিবার ( ২৪ মার্চ ) রাতে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। সাবেক এই মেম্বার পদপ্রার্থী ওই ইউনিয়নের নারিকেল কেন্দ্রে ফেল করেন। এ বিষয়ে ততকালিন সময়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান এসআই।