‘পহেলা বৈশাখের আগের রাতে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় আলপনা আঁকব’
মো. মুনীরুজ্জামান। দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী। যার মনন আর হাতের ছোঁয়ায় মূর্ত হয়ে উঠে প্রকৃতির সব বিমূর্ত বিষয়। তিনি বাংলালিংকের ‘আলপনায় বাংলাদেশ’ আয়োজনের একজন পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করছেন। চিত্রে চিত্রে তার তার পথচলা ও আল্পনা নিয়ে তার ভাবনা- এসব বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে এাকান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি।
‘আলপনায় বাংলাদেশ’ সম্পর্কে বলুন।
এটা তো একটি কাজের শিরোনাম। এই কাজের অংশ হিসেবে রাতভর ছেলেমেয়েরা আজ বৃহস্পতিবার মানিক মিয়া এভিনিউতে রাত নয়টা থেকে আলপনা আঁকা শুরু হবে। আমরা চার লাখ মিটার আল্পনা করব সারারাত ধরে। অভিজ্ঞ হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। সবাই এ কাজে অংশ নিতে পারবে।
রাজধানী ছাড়া আর কোথায় এই কার্যক্রম চলবে?
ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ ছাড়াও দেশের প্রধান ৫টি শহর যেমন চট্টগ্রামের ডিসি হিল, রাজশাহীর পদ্মা নদীর পার, খুলনার শিবাড়ি সার্কেল, বরিশালের বঙ্গবন্ধু পার্ক রোড ও ময়মনসিংহের টাউন হল সার্কেলে এই আলপনা উৎসব হবে। সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে এইসব জায়গাতেই একই সময়ে আলপনার কাজ হবে।
বৈশাখী উৎসবের সাথে আলপনার সম্পর্ক নিয়ে বলুন।
পহেলা বৈশাখ মানে বছরের প্রথম দিন। বছরটিকে স্বাগতম জানাতে রঙে রঙে সাজে পুরো আশপাশ। আলপনায় ব্যবহার হয় সাতটি রঙ। রঙের এই বারোয়ারি ব্যবহার হয় আলপনায়।
আপনার প্রিয় রঙ কোনটা?
ধুসর। এটা আমার সেই শৈশবের প্রিয় রঙ।
আলপনা নিয়ে আপনার কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে?
পরিকল্পনা অবশ্যই আছে। ইচ্ছে আছে, এক পহেলা বৈশাখের আগের রাতে পুরো ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় আলপনা আঁকব। এই আলপনা এঁকে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড-এ নাম লেখাব।
চিত্রশিল্পী কেন হলেন?
আসলে বলে কয়ে তো আর চিত্রশিল্পী হওয়া যায় না। তবে সেই শৈশব থেকেই প্রকৃতির নিদর্শনগুলো দেখতে খুব ভালো লাগত। সেই ভালো লাগা থেকে ছবি আঁকার চর্চা শুরু করি। তারপর আজকের এই আমি হয়েছি।
চিত্রশিল্পী না হলে কী হতেন?
অবশ্যই ক্রীড়াবিদ। আমার সবধরণের খেলাধুলা খুব ভালো লাগে। সময় পেলেই দেখি। ক্রিকেট, ফুটবল এমনকি ব্যাডমিন্টন পর্যন্তও আমি টিভিতে সময় পেলেই দেখি।
চিত্রে প্রাধান্য দেন কোন বিষয়টি?
অবশ্যই প্রকৃতি। যেহেতু আমি একজন প্রকৃতি প্রেমিক, তাই আমার ছবিতেও সে ছাপ রাখি।
শোনা য়ায়, চিত্রশিল্পীরা জীবনমুখী হন কম।
কথাটা কিছুটা ঠিক আবার কিছুটা ঠিক নয়। ঠিক এজন্য, চিত্রশিল্পীরা প্রচন্ডরকম প্রেমিক টাইপের হয়। ভেতরে সেই প্রেমটা না থাকলে আঁকা ছবিটা মূর্ত হয়ে ওঠে না। এজন্য অনেকেই ছবির মধ্যে এত বুঁদ হয়ে যান যে আশপাশের মানুষেরা তখন হয়তো তাকে ভাবেন জীবন সম্পর্কে উদাসীন। এখানেই ঠিক বেঠিকের প্রশ্ন আসে। বিষয়টা ঠিক নয়। কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া চিত্রশিল্পীরা আর দশজনের মতই জীবনমুখী।
বর্তমানে কোন বিষয়কে সামনে রেখে ছবি আঁকছেন?
সামনে একটি চিত্র প্রদর্শনী আছে। সেটাকে কেন্দ্র করেই আমার ছবি আঁকা চলছে। আমি তো প্রকৃতি ও মানুষ নিয়ে লিখি। সেই বেইজ ধরে ধরে একেকটা ছবি আঁকার কাজ হচ্ছে।