যুদ্ধ হলে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অস্ত্র প্রয়োগের সঙ্গে বিপুল ধ্বংসলীলা দেখবে বিশ্ব
‘ডে অব সান’ উপলক্ষে নর্থ কোরিয়ার চালানো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে সাউথ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। এমন সময় এ ঘটলো; যখন মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটি বিশ্বের সামনে তাদের নতুন শক্তি ‘গেম চেঞ্জার’ ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করলো। যদিও, এখন পর্যন্ত নর্থ কোরিয়ার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পরিস্কার করে কিছু বলা হয়নি।
নর্থ কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের সিনপো শহর থেকে এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চলানো হয় বলে দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো ধরণের উস্কানীমূলক পদক্ষেপের বিপরীতে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছে নর্থ কোরিয়া। তবে, হামলার জবাব দিতে যে নর্থ কোরিয়া প্রস্তুত তার আভাস মিলেছে এরই মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার এ অঞ্চলীয় মিত্র সাউথ কোরিয়া এবং জাপানে সঙ্গে নিয়ে নর্থ কোরিয়ার ওপর চড়াও হলেও যুদ্ধ জয় অনেকটাই অসম্ভব।
মনে করা হচ্ছে, যুদ্ধ যদি শুরু হয়েই যায়; মানব ইতিহাসে অস্ত্রের সর্বোচ্চ প্রয়োগের পাশাপাশি বিপুল ধ্বংসলীলা দেখবে বিশ্ব। তাতে যে, শুধু নর্থ কোরিয়ারই নয় ক্ষতিগ্রস্থ হবে তা নয়। সমানভাবে ভাবে ক্ষতির শিকার হবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররাও।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে: এ অঞ্চলে অবলীলায় পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। কেননা, নর্থ কোরিয়ায় পরমাণু বোমা ব্যবহার করলে সমান ভাবে ক্ষতির স্বীকার হবে যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র সাউথ কোরিয়া এবং বিশ্বের অন্যতম সুপার পাওয়ার চীন। কিন্তু, সেই ঝুকি নেই নর্থ কোরিয়ার সামনে! অবশ্য, এরই মধ্যে বিকল্পও চিন্তা করে রেখেছে মার্কিনিরা।
নর্থ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সাং এর ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে শক্তির গভীরতা এরই মধ্যে দেখিয়েছে দেশটি। যা বিবিসেতে লাইভ পর্যন্ত করা হয়। নর্থ কোরিয়ার স্বাভাবিকতায় যা বিরল। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের শক্তির জানান দিতেই নর্থ কোরিয়ার এতো আয়োজন।
দেশটির হাতে রয়েছে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ-যোগ্য ব্যালাস্টিক মিসাইল, যা কিনা বিশ্বের যেকোনো জায়গায় লক্ষ্যবস্তুকে টার্গেট করতে সক্ষম। এছাড়াও, বিশ্বের যেকোন প্রান্তে পরমাণু আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষুদ্র সংস্করণের পরমাণু ওয়ারহেড অর্জনের দাবি করে রেখেছে দেশেটি। তাই মার্কিনিদের আশঙ্কাও কিন্তু কম নয়।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, নর্থ কোরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। পারমাণবিক পরীক্ষার পর পরবর্তী পদক্ষেপ যদি নেয় নর্থ কোরিয়া তাহলে যুক্তরাষ্ট্র প্রচলিত অস্ত্র দিয়েই এ হামলা চালাবে।
কানাডাভিত্তিক গ্লোবাল রিসার্চ এক প্রতিবেদনে বলেছে, উত্তর কোরিয়া ও ইরানে ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এমওএবি-র (মাদার অব অল বোম্বস) চেয়ে বড় বোমা তৈরি করেছে।
পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে, গত সোমবার নর্থ কোরিয়ার জলসীমা অভিমুখে যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা সম্পন্ন নৌবহর পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। জাপানি যুদ্ধজাহাজও এই বহরের সঙ্গে যোগ দেবে এমন ঘোষণাও এসেছে।
এর মধ্যেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স প্রথমবারের এশিয়া সফরে রোববার সাউথ কোরিয়া আসছেন।
বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছে নর্থ কোরিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্র চীন। তারা এরই মধ্যে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে সহযোগিতা চেয়ে রাশিয়ার দ্বারস্থ হয়েছে।