নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি বিপজ্জনক ট্রাম্প: রুশ গণমাধ্যম
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের চেয়েও বেশি বিপজ্জনক। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের এমন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের প্রতি রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের একটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
রাশিয়ার সুপরিচিত সরকারপন্থি সংবাদ উপস্থাপক দিমিত্রি কিজেলইয়ভ তার সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘ভেস্তি নেদেলি’তে বলেন, বিশ্ব একটি পারমাণবিক যুদ্ধের থেকে একচুল মাত্র দূরত্বে রয়েছে। ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প আর কিম জং-উন – এই দুই ব্যক্তির দ্বন্দ্ব থেকে যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। দু’জনেই বিপজ্জনক। কিন্তু কে বেশি? ট্রাম্প,’ বলেন তিনি।
কিজেলইয়ভের ভাষায়, ট্রাম্প কিমের তুলনায় বেশি ‘আবেগতাড়িত’ এবং ‘অনিশ্চিত’ চিন্তাধারার অধিকারী। তবে দু’জনের মধ্যেই সীমিত আন্তর্জাতিক বিষয়ক অভিজ্ঞতা, কর্মকাণ্ডে অনিশ্চয়তা এবং যুদ্ধ করতে সদাপ্রস্তুত – এ বিষয়গুলো রয়েছে।
তবে নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়ে কম ভয়ানক বলে মন্তব্য করেন এই অভিজ্ঞ সংবাদ উপস্থাপক। কারণ হিসেবে বলেন, কিম জং-উন আলোচনার জন্য তৈরি, তিনি অন্য কোনো দেশকে এখনো আক্রমণ করেননি এবং মার্কিন উপকূলে নৌবাহিনীর যুদ্ধবহরও পাঠাননি। কোরীয় উপকূলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার পাঠানোর প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।
ব্যঙ্গ করে কিজেলইয়ভ এ-ও বলেন, নর্থ কোরিয়ার নেতার মেয়ের অন্তত ট্রাম্পকন্যা ইভানকার মতো
বাবার প্রসাশনিক বাসস্থানে অফিস নেই!
দিমিত্রি কিজেলইয়ভের বক্তব্যই ক্রেমলিনের বক্তব্য কিনা, তা জানতে চাওয়া হলে সরাসরি জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। বলেন, ‘তার (কিজেলইয়ভ) অবস্থান কাছাকাছি, তবে সবসময় না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে সবসময় রাশিয়া তাকে অভিনন্দন ও সমর্থন জানিয়ে এসেছে। এমনকি ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য রাশিয়া হ্যাকিংয়ের আশ্রয় নিয়েছিল – এমন অভিযোগও উঠেছে বারবার। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্পের নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে একটু একটু করে এই সুসম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের ওপর বিশাল একটি বোমা ফেলা, রুশ সরকারের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করে ক্রিমিয়া দখলের অভিযোগ আনা এবং রাশিয়ার মিত্র সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর বিমানঘাঁটিতে মিসাইল হামলা করার মধ্য দিয়ে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের ভিত অনেকটাই নড়ে উঠেছে।