অনেকটাই পিছিয়ে কওমী শিক্ষার্থীরা সমমর্যাদা পেলেও
সমমর্যাদা পেলেও পাঠ্যসূচির কারণে স্নাতকোত্তর সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে অনেকটাই কওমি শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে থাকবে বলে মনে করেন শিক্ষা গবেষকরা। আর তাই এই পদ্ধতির কাঠামোগত পরিবর্তন জরুরি বলে মনে করেন তারা। যদিও পিছিয়ে থাকার বিষয়টি মানতে নারাজ কওমি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন সুযোগ পেলেই নিজেদের তুলে ধরতে পরবে এসব শিক্ষার্থীরা।
উনিশ শতকে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ কওমি মাদ্রাসার অনুসরণে এদেশে কাওমি মাদ্রাসার প্রচলন শুরু হয়। সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই পরিচালিত দেশে বর্তমানে ১৩ হাজার ৮২৬ টি কাওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪৬০ জন।
মূলত ইসলামিক শিক্ষায় পারদর্শী হওয়াই এর মূল লক্ষ্য। তবে প্রাথমিক বা নূরানি স্তর থেকে মোতাওসেতা বা নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে বাংলা, গণিত, ভূগোল, ইতিহাস, অর্থনীতিসহ বেশ কিছু বিষয় পড়ানো হয় বলে জানান কওমি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। আর স্নাতকোত্তর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত তাকমীল স্তরে হাদিস সম্পর্কে বিষদ পড়ানো হয়। যা সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার আরবি ও ইসলামিক শিক্ষা ব্যবস্থার স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সিলেবাসের চেয়ে সমৃদ্ধ বলে মনে করেন তারা।
ইকরা বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ বলেন, 'দাওরায়ে হাদিস শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি স্টাডিজের এম. এ নয় বরং তার চেয়ে উন্নতমানের।'
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া সভাপতি মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, 'এখানে বাংলা, ইংরেজি, গনিত, সমাজ, সমাজ বিজ্ঞান, কম্পিউটার এবং ভূগোল অত্যন্ত যত্ন সহকারে পড়ানো হয়।'
পাঠ্যসূচি আর পাঠদান পদ্ধতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে এসব কওমি শিক্ষার্থীদের অনেকটাই পিছিয়ে রেখেছে বলে মনে করেন শিক্ষা গবেষকরা। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্তর থেকেই কওমি শিক্ষা অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা জরুরি বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।
ঢাবির শিক্ষা গবেষণা ইন্সটিটিউট অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, 'সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় যে যে সিলেবাস পড়ানো হয় এবং এর শিক্ষকদের যে প্রশিক্ষণ, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে কওমী শিক্ষার ক্ষেত্রে এই একি জিনিস গুলো মানা গেলে হয়তো এই দুই শিক্ষার মধ্যে সমতা আনা যাবে।'
নিচের স্তর গুলো কেন্দ্রীয়ভাবে কোন নির্দিষ্ট কাঠামো না থাকলেও কওমি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন তাকমীল পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে আল হাইয়াতুল উলইয়ালীল জামিয়াতিল কাওমীয়া বাংলাদেশ এর আওতায় নেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে। সময়ের প্রয়োজনে পাঠ্যসূচি পরিবর্তর করা হবে বলেও বলছেন তারা।
কওমি শিক্ষার্থীদের বিশেষ দক্ষতা কাজে লাগাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের প্রতি আহ্বান কওমি শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের।