পরিমলের স্টাইলে এবার শ্রীপুরের আমিনুল মাস্টার!
গাজীপুর প্রতিনিধি Channel 4TV :
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শৈলাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিষয়ের এক শিক্ষকের নাম আমিনুল মাস্টার। পুরো নাম আমিনুল ইসলাম। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধরের স্টাইলে এক ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কৌশলে ধারণ করেন ওই ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর কিছু ছবি। পরে ওই ছাত্রীকে ব্যাপক মেইল করার ফাঁদ পাতেন আমিনুল।
বিষয়টি ছাত্রীর পরিবার আঁচ করতে পেরে কিছুদিন আগে ওই ছাত্রীকে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করায়। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক আমিনুল বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে তোলা আপত্তিকর কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন । আর সেই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় ওই ছাত্রী ও তার পরিবার লজ্জায় এখন ঘরবন্দি।
এছাড়াও এই শিক্ষক আমিনুল দুই বছর আগে এক ছাত্রী ও তার অভিভাবককে পিটিয়ে অজ্ঞান করে স্কুলের অফিস কক্ষে ফেলে রেখে গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল। তখন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এর কিছুদিন পরই আবার সেই একই স্কুলের স্বপদে ফিরে আসেন আমিনুল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন , উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের তোতা আকন্দের বড় ছেলে আমিনুল ইসলাম (মাস্টার)। প্রায় ১০ বছর আগে শরীরচর্চার শিক্ষক হিসেবে উপজেলার শৈলাট উচ্চবিদ্যালয়ে চাকরি নেন। বছর দুই আগে আমিনুল ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনির ওই ছাত্রীর সঙ্গে কৌশল করে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ সম্পর্কেও বিষয়টি মেয়েটির পরিবার আঁচ করতে পেরে তাকে কিছুদিন আগে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক আমিনুল বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে কৌশলে তোলা আপত্তিকর কিছু ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। এর পরই সেই সব ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে।
মুহূর্তেই অশ্লীল ছবিগুলো মানুষের হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে লজ্জায় ঘর থেকে বের হতে পারছে না ওই ছাত্রী ও তার পরিবার। গত কয়েক দিন ধরে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার ও এলাকাবাসী।
ওই ছাত্রীর মা ও চাচা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আর কী বলব। আমরা ওই শিক্ষকের সঠিক বিচার চাই। আমাদের মেয়ের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। যেকোনো সময় একটা অঘটন ঘটে যেতে পারে।’
অন্যদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এসব ছবি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না, কম্পিউটার দিয়ে স্কুলের ১০ম শ্রেনীর দুই ছাত্র রিফাত ও সেলিম এসব বানিয়েছে। এবং উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে রিফাত (১৭),শৈলাট গ্রামের আব্দুল আলিম মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া (১৬),ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়,রাজি না হওয়ায় ওই ছাত্রীর ছবির সাথে অন্য এক ছবি মোবাইলের মাধ্যমে ইডিট করে বন্ধুদের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে দুই ছাত্র রিফাত ,ও সেলিম মিয়া শিকার করে বলেন,আমিনুল স্যার আমাদেরকে পিটিয়েছিল,এবং ওই ছাত্রী আমার বন্ধু সেলিমের সাথে প্রেম না করায় আমরা দুই বন্ধু মিলে মোবাইলের সফটারের মাধ্যমে ছবি ইডিট করেছি পরে সকল বন্ধুদের মোবাইলে শেয়ারিটের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছি বুঝতে পারিনাই ভুল হয়েছে ক্ষমা চাই। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘ওই ছাত্রী এখন আমাদের বিদ্যালয়ে পড়ে না। বিষয়টি সত্যি খুবই দুঃখজনক।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল অষ্টম শ্রেণির আরেক ছাত্রীকে অন্যের মোবাইল দিয়ে নিজের অসুস্থতার কথা বাবাকে জানানোর ‘অপরাধে’ প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে করে নির্যাতন করেন শিক্ষক আমিনুল ইসলাম। স্কুলের ভেতরে ফোনে কথা বলায় ওই ছাত্রী ও তার চাচা শরীফকে বেদম পিটুনি দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে রাখেন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে। পরদিন পত্রিকায় খবর দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর গাজীপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করেন।